সত্যপাঠ ডেস্ক
মাগুরায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। আট বছর বয়সী এক শিশু তার বড় বোনের বাড়িতে গিয়ে ‘ধর্ষণ ও নির্যাতনের’ শিকার হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, শিশুটির বোনের শ্বশুর তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছেন। এই ঘটনায় শিশুটি গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এই জঘন্য ঘটনার প্রতিবাদে এবং অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্থানীয় জনতা শুক্রবার জুমার নামাজের পর মাগুরা শহরের ভায়না মোড় ও চৌরঙ্গী মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। এরপর তারা মাগুরা সদর থানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানায়।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাদের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায়। শিশুটি কয়েক দিন আগে মাগুরা পৌর সদরে তার বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে আনা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় শিশুটির বড় বোনের শ্বশুর ও তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শিশুটির বড় বোন জানান, বুধবার রাতে তিনি তার স্বামী ও ছোট বোনকে নিয়ে একই কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন। সেহরি খাওয়ার আগে তিনি দেখেন, তার ছোট বোন মেঝেতে কাঁপছে এবং কাঁদছে। পরে সকালে শিশুটি তাকে জানায়, তার শ্বশুর তাকে ঘুম থেকে তুলে অন্য কক্ষে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। শিশুটির বোন আরও অভিযোগ করেন, তার স্বামীও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং তার শাশুড়িও বিষয়টি জানেন।
শিশুটির বোন জানান, চার মাস আগে তার বিয়ে হয় এবং বিয়ের দুই মাস পর তার শ্বশুর তাকেও শ্লীলতাহানি করেছিলেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির মা জানান, তার মেয়ের অবস্থা ভালো নয় এবং তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। শিশুটির ফুফাতো ভাই জানান, শিশুটির চেতনা এখনও ফেরেনি এবং তাকে পিআইসিইউতে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল এবং শনিবার বিস্তারিত জানানো হবে।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষুব্ধ জনতা মাগুরা সদর থানার প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম জানান, ধর্ষণের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, শিশুটির পরিবার এখনও কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি, তবে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।