Friday, March 14, 2025
Homeআঞ্চলিকচৌগাছায় ঘুমন্ত বাবাকে হত্যা, এলাকায় তোলপাড়

চৌগাছায় ঘুমন্ত বাবাকে হত্যা, এলাকায় তোলপাড়

সুজন দেওয়ান ও মারুফ হাসান, চৌগাছা

যশোরের চৌগাছায় ঘুমন্ত অবস্থায় শরিফুল ইসলাম (৪১) নামের এক ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার ছেলে রমিম (২১) এর বিরুদ্ধে। শনিবার ভোর চারটার দিকে উপজেলার পাতিবিলা উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শরিফুল ইসলাম ছিলেন ২০২২ সালের আলোচিত বিএনপি সমর্থক ঠান্ডু মেম্বার হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী। বর্তমানে পলাতক রমিমের বিরুদ্ধে চৌগাছা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিহতের ভাই মফিজুর রহমান জানান, রমিম সম্প্রতি খারাপ সঙ্গের সঙ্গে মিশে নেশার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছিল। তার আচরণও ছিল অস্বাভাবিক, এবং এই ধরনের নির্মমতা কেবল নেশাগ্রস্ত মানুষের পক্ষেই সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।

নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী হাসিনা বেগম জানান, তিনি ভোর রাতে সেহেরী খাওয়ার আগে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যান। ফিরে এসে তিনি দেখেন, তার স্বামীকে তার আগের স্ত্রীর ছেলে রমিম এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছে। বাধা দিতে গেলে রমিম তাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় শরিফুলকে দ্রুত চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত শরিফুল ২০২০ সালে তার ১২ বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে আলোচনায় এসেছিলেন। এরপর তার প্রথম স্ত্রী মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান, তবে ছেলে রমিমকে বাবার কাছে রেখে দেন। রমিমের বিয়েও হয়েছিল, কিন্তু তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্প্রতি সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং প্রায় ১৫ দিন আগে তার সৎ মায়ের বোনের মেয়ের সাথে বিয়ে হয়। এসব পারিবারিক সমস্যাই রমিম ও শরিফুলের মধ্যে উত্তেজনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এদিকে, ২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে চৌগাছার পাতিবিলা বাজারে কুপিয়ে হত্যার শিকার হন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ঠান্ডু বিশ্বাস। নিহত শরিফুল ইসলাম ছিলেন এই হত্যামামলার অন্যতম সাক্ষী, যা ঘটনার প্রেক্ষাপটে নতুন একটি রহস্যের জন্ম দিয়েছে। নিহত ঠান্ডুর স্ত্রী জানান, এ মামলার স্বাক্ষী থাকায় অতি সম্প্রতি ওই এলাকার সেলিম, ফারুকরা শরিফুলকে হুমকিও দিয়েছিলো।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, পারিবারিক কলহের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, শরিফুলের স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় তদন্ত চলছে এবং পলাতক ঘাতক রমিমকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। নিহতের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে থানায় আজ পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আলোচিত