মোকাদ্দেছুর রহমান রকি
বৃহস্পতিবার থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। বাংলা আবশ্যিক ১ম পত্র পরীক্ষা দিয়ে এ বছর এসএসসিতে যশোর শিক্ষাবোর্ড থেকে অংশ নিচ্ছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬৪ জন পরীক্ষার্থী।
গত বছর পরীক্ষার্থী ছিল ১লাখ ৬২ হাজার ৭০০ জন পরীক্ষার্থী। এ বছর কমেছে ২১ হাজার ৬৩৬ জন পরীক্ষার্থী। যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. আব্দুল মতিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, যশোর শিক্ষাবোর্ডে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৪১ হাজার ৬৪ জন। তার মধ্যে ৬৯ হাজার ৮৫ জন ছাত্র ও ৭১ হাজার ৯৭৯ জন ছাত্রী রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রয়েছে ৪০ হাজার ১৪৪ জন, মানবিকে বিভাগের শিক্ষার্থী রয়েছে ৮৫ হাজার ২৩৮ জন ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৫ হাজার ৬৮২ জন। গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার তুলনামূলক শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কমেছে।
তবে, নাম প্রকাশে অনচ্ছুক বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানান, গত কয়েক বছর ধরে অনেকটা বাধ্য হয়ে সব শিক্ষার্থীকে বোর্ড পরীক্ষায় অংশ দেয়ার সুযোগ দিতে হতো। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির চাপে এটা করতে বাধ্য হতেন তারা। এখন আর আগের কেউ সভাপতি নেই।
অধিকংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এডহক কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রধান শিক্ষকদের অনৈতিক কোন চাপ নেই।
টেস্ট পরীক্ষায় একাধিক বিষয়ে যেসব শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি তারা বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। সেইজন্য মূলত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। আশা করা যায় এবার পরীক্ষার ফলাফল গত কয়েক বছরের চেয়ে অনেক ভাল হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড.আব্দুল মতিন বলেন, সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষাবোর্ডের ২৯৯ টি পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবদের নিয়ে শিক্ষাবোর্ডের পক্ষ থেকে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। সেখানে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের সাথে সহযোগিতা ও সহমর্মিতা সুলভ আচারণ করতে হবে।
কোন পরীক্ষার্থী যে কোন কারণে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় আধা ঘণ্টা পরে এলেও তাকে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতে হবে। পরীক্ষার্থীদের সাথে কোন ধরণের খারাপ আচারণ করা যাবে না। মানবিক আচারণ করতে হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
কেন্দ্রের চারপাশে লাল পতাকা চিহ্নিত দিয়ে শুধুমাত্র পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারি ছাড়া কাউকে ঢোকার সুযোগ দেয়া হবে। এর বাইরের কেউ ঢুকলে ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার অপরাধে গ্রেফতার করা হবে। পরীক্ষা আইন অমান্য করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
কেন্দ্রের মধ্যে কেন্দ্র সচিব ছাড়া কোন শিক্ষকের কাছে মোবাইল পেলে তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করা হবে। কোনভাবেই পরীক্ষা আইনের ব্যাতয় ঘটাবে না। তারপরও পরীক্ষার দায়িত্ব থাকা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তথ্যবহুল অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধ্যমিক আমিনুল ইসলাম জানান, পরীক্ষা নকল মুক্ত ও সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। পরীক্ষা চলাচালিন পরিদর্শনের জন্য বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা দিয়ে ১০টি ও বোর্ডের অধীনে ১০ জেলায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা, কলেজ ও সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১০টি ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে।