মিজানুর রহমান, মণিরামপুর
মণিরামপুরে আধিপত্য বিস্তারসহ নানা ইস্যুতে শহরের প্রাণকেন্দ্রে পাশাপাশি মঞ্চ তৈরী করে একের পর এক পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচী পালনকে কেন্দ্র করে আবারো আওয়ামীলীগের দলীয় গ্রুপিং চরম আকার ধারণ করেছে। অভিজ্ঞ রাজনীতিক ও সচেতন মহল আশংকা করছেন ক্ষমতাসীন দু’টি গ্রুপের মধ্যে যে কোন সময় ঘটতে পারে নানা অঘটন। রীতিমত স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে হাজার-হাজার নেতা-কর্মী পাল্টা-পাল্টি দু’টি গ্রুপের সমাবেশে অংশ নিতে লক্ষ্যকরা গেছে। আর এমন পরিস্থিতি মাথায় নিয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে-পয়েন্টে মোতায়েন করা হয় পুলিশ।
জানাযায়, গতকাল রবিবার সকালে সাবেক দলীয় কার্যালয়ের সামনে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে মঞ্চ তৈরী করে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়।
উপজেলা আওয়ামীলীগের ব্যানারে অনুষ্ঠিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রভাষক ফারুক হোসেন উপস্থিত তৃণমূল দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি থানায় অথবা অন্য কোন স্থানে আপাতত জিডি করবনা। আপনাদের (নেতা-কর্মীদের) কাছে আমি জিডি করে রাখলাম। যদি আমার কোন প্রকার ক্ষতি হয় তার জন্য দায়ী থাকবেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যই। কারণ ক্ষমতার দাপটে তিনি বার বার ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দূরে ঠেলে দিয়ে মণিরামপুরের আওয়ামীলীগকে দ্বিধাবিভক্তি করার চেষ্টা করছেন।
এছাড়া তিনি আত্মীয় স্বজন এবং হাইব্রিড ব্যক্তিদের প্রতিষ্ঠিত করার পরিকল্পনায় দলের মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি করেছেন। স্থানীয় অধিকাংশ আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা বর্তমানে প্রতিমন্ত্রীর সাথে নেই। ফলে দলীয় হাইকমান্ড জরিপ করলে মণিরামপুরের দলীয় সাংগঠনিক অবস্থা কোনদিকে তা জানতে পারবেন।
একই মঞ্চে শোক দিবসের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মণিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম প্রতিমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি ক্ষমতা বিস্তার করে আমাকে মহিলা ভেবে চেয়ার থেকে সরানোর জন্য অনেক অপচেষ্টা করেছেন। আপনি ক্ষমতার দাপটে অপরাধীদের পক্ষ নেয়াসহ কোথায় কি করেছেন তা স্থানীয় আওয়ামীলীগের পাশাপাশি মণিরামপুরের জনগণ ভাল বলতে পারবেন।
অপরদিকে, উপজেলা আওয়ামীলীগের ব্যানারে গত শনিবার বিকেলে দলীয় কার্যালয়ের সামনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পৌর মেয়র কাজী মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস পালন করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে আগত নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য তার ২৫ মিনিট বক্তব্যের মধ্যে অভিযোগ করেন ভোল পাল্টানো আওয়ামীলীগের একটি গ্রুপ তাকে এবং যুবলীগকে টার্গেট করেছে। এরই অংশ হিসেবে তারা বিভিন্ন স্থানে আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
একই মঞ্চে সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান প্রতিপক্ষ গ্রুপের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন শোকের মাসের কারণে কিছুই বলা হচ্ছেনা, আমরা ধৈর্য্য ধারণ করছি। পরে দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গকারীদের কাছ থেকে জবাব নেয়া হবে।
এছাড়া, একই মঞ্চে দলীয় গ্রুপিং এর জের ধরে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ নানা ধরনের বক্তব্য দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাত্র এক দিনের ব্যবধানে পাশাপাশি মঞ্চ তৈরী করে পাল্টা-পাল্টি দু’টি গ্রুপের সমাবেশে স্বাস্থ্য বিধি অমান্য করে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। এছাড়া, দু’টি গ্রুপের উক্ত সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েক ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।