মিজানুর রহমান, মণিরামপুর
সারাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকায় যশোরের মণিরামপুরে স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজগামী সিংহভাগ শিক্ষার্থীরা ফ্রি-ফায়ার ও পাবজি গেম খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে প্রায় পরিবারে স্মার্ট ফোন থাকায় গেমে আসক্ত শিক্ষার্থীরা সকালে বেলা উঠার সাথে সাথে দলবেধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বারান্দায়, নদীর তীরে কিংবা ঝোপের মধ্যে এসব খেলায় মত্ত হতে দেখা যায়।
জানা গেছে, বিত্তবান থেকে শুরু করে দরিদ্র সব শ্রেণির সন্তানেরা এ খেলায় মগ্ন হতে দেখা যাচ্ছে। উঠতি যুবকদের এটি মাদক আসক্তের চেয়েও ভয়াবহ রুপ ধারন করছে। তাদের নিয়ন্ত্রনে অভিভাবকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। উপরোন্ত অভিভাবকরা বাঁধা দিলে গেমে আসক্ত শিক্ষার্থীরা বাড়ির দামি আসবাবপত্র ভাংচুরসহ অনেকই আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছে। সামাজিক মানমর্যাদা ও আত্ম-সম্মানের ভয়ে অনেক অভিভাবক অন্যের কাছে এসব নিয়ে কথা বলতে পারছেন না। নিরবে-নিবৃতে মেনে নিতে হচ্ছে সন্তানের অন্যায় দাবি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার ভোজগাতী ইউনিয়নের কন্দোপপুর গ্রামের এক অভিভাবক বলেন, তার ছেলেটি সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়ায় ভাল ফলাফল করলেও এখন পড়ালেখায় মন নেই। পরে জানতে পারেন এলাকার আরও ২৫ থেকে ৩০ জন ছেলের সাথে তার সন্তান মোবাইলে ফ্রি-ফায়ার গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে।
আরেক অভিভাবক বলেন, তার ছেলে টাকা চুরি করে নিয়ে মেগাবাইট ঢুকিয়ে ফ্রি-ফায়ার গেম খেলে শেষ করেছে। উপজেলার হোগলাডাঙ্গা ঋষি পল্লীর এক ভ্যান চালক বলেন, ভ্যান চালানো কষ্টের টাকা দিয়ে গেম খেলার জন্য প্রতিনিয়ত তার সন্তানকে মোবাইলের মেগাবইট কিনে দিতে হয়।
সূত্র জানায়, শুধু বেলা উঠার পর নয়, রাতে খাবারের পর তারা ঘুমিয়ে গেলেও স্কুল-কলেজ পড়–য়া সন্তাননা ঘর থেকে শব্দ বাইরে না যাওয়ার জন্য সিলিং ফ্যান অধিক গতিতে দিয়ে এ খেলায় মগ্ন হচ্ছে। ভুক্তভোগী অভিভাবকসহ সর্বমহল থেকে দাবি উঠেছে এ গেম যেন দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রয়োজনে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন তারা।