মিজানুর রহমান, মণিরামপুর
শ্রাবণ মাসের মাঝা-মাঝি সময় অতিক্রম করেছে। চাষিরাও জমি খালি করতে পাট তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মণিরামপুরে এবার পাট চাষ করা হয়েছে ৫২’শ হেক্টর জমিতে। উপজেলার মশ্বিমনগর, ঝাঁপা, শ্যামকুড়, খেদাপাড়া, রোহিতা ইউনিয়নে উল্লেখযোগ্য পাট চাষ করা হয়েছে।
কৃষি অফিস জানিয়েছেন, স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতার কারণে মণিরামপুরের পূর্বাঞ্চলে আপাতত পাট চাষ সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে পাকা রাস্তার পশ্চিমেই পাটের আবাদ করছেন চাষিরা। তবে শ্রাবণ মাসের শেষ পর্যায়ে জমি খালি করতে পাট চাষিরা পাট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমি থেকে পাট কাটা, তা বহন এবং পাট পচানো সব কাজ নিয়েই ফুসরত নেই চাষিদের। এসব জমিতে আবার আমন চাষ করা হবে।
পাতন গ্রামের চাষি আবুল হোসেন জানান, অন্যান্য বার যে ভাবে পাট চাষ করা হতো বোরো আবাদের প্রভাবের কারণে এবার তা কমে গেছে। তবে পাটের বাজার মূল্য ভালো যাচ্ছে এবার। পাট চাষিরা এবার বেশ লাভবান হবে। খেদাপাড়া গ্রামের চাষি মোজাহার আলী সরদার ৩৩শতকে তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন এবার। পাট কাটা শুরু করেছেন তিনি।
জানতে চাইলে চাষি মোজাহার আলী সরদার এ প্রতিবেদককে জানান, পাট উঠিয়ে জমিতে আবার আমন ধান লাগানো হবে। এ কারণে শ্রবণ মাসের মধ্যেই জমিতে আবার আমনের চারা রোপন করতে জমির পাট উঠাতে হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে চাষি মোজাহার আলী জানান, বীজ রোপন থেকে শুরু করে পাট ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচা হবে।
জানতে চাইলে এই চাষি মোজাহার জানান, চৈত্র মাসে সেচ দিয়ে লাগানো পাট ৩৩শতকের একবিঘা জমিতে ১৪ থেকে ১৫মণ পাট উৎপাদন সম্ভব। যা চলতি বাজার মুল্য হিসেবে ২৫ থেকে সাড়ে ২৫ হাজার টাকা পাট বিক্রি করা সম্ভব। এর বাইরে ৪ থেকে সাড়ে ৪’শ আটি পাট খড়ি হবে যা ২০ টাকা মুল্য বিক্রি করলে ৪ হাজার টাকা আসবে। সবমিলিয়ে এ বছর পাটে ভালো পয়সা আসবে। একই ভাবে হিসাব দিলেন খড়িঞ্চী গ্রামের চাষি আমিনুর রহমান।
এ চাষি আমিনুর রহমান জানান, বিগত দিনে মণিরামপুরে যে ভাবে পাট চাষ হয়েছে তা বর্তমানে বোরোর প্রভাবে সে পাট চাষ কমে গেছে। ভালো দাম পাওয়ায় পাটের জমিতেও বোরো চাষ করায় পাট চাষের উপর প্রভাব পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান, তুলনা মূলক ভাবে এবছর মণিরামপুরে পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। গত বছর এ উপজেলায় পাট চাষ করা হয়েছিল ৪ হাজার ৮’শ হেক্টর জমিতে। সে তুলনায় এ বছর বৃদ্ধি পেয়ে ৫২’শ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এ বছর পাটের বাজার যে ভাবে পাচ্ছেন চাষিরা সে তুলনায় আগামীতে পাট চাষ হয়তো আরো বৃদ্ধি পাবে।