মিজানুর রহমান, মণিরামপুর
বেশী দাম পাবার আশায় কিছুটা আগে ভাগেই মণিরামপুরে পাট কাটা শুরু হয়েছে পুরোদমে। পাতন গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস বলেন দুই বিঘা জমিতে পাটের চাষ করিছি ফলন যা হইছে তা দেখলি চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে। পাট কাটা শুরু করিছি। সব মিলে প্রায় ১১-১২হাজার টাকা খরচ হবে পাট ঘরে তোলা পর্যন্ত। ভালোভাবে ধুয়ে বাজারে তুলতি পারলি ভালো দাম পাবো। তাতে করে খরচ খরচা বাদে ৩০-৩৫ হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশাকরি। অন্য দিকে প্রায় একই সুরে কথা বলেন ভোজগাতি গ্রামের চাষি ফারুক হোসেন। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে দেখা মিলছে সারি সারি হয়ে পাট কাটছে বাংলার কৃষক।
সাম্প্রতিক কালের মধ্যে গতবছর পাটের দাম ছিল বেশি। সেই কারণে এবার চাষিরা পাট চাষে বেশি ঝুঁকেছেন। ইতিমধ্যে কেউ কেউ পাট কেটে বাজারেও তুলেছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মণিরামপুরে পাঁচ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল চার হাজার ৮২০ হেক্টরে। প্রায় ৪০০হেক্টর জমিতে চাষ বেশী হয়েছে।
এবছর বেশি পাটের চাষ হয়েছে মণিরামপুর সদর, খেদাপাড়া, শ্যামকুড়, চালুয়াহাটি ও মশ্মিমনগর ইউনিয়নে। পাট গবেষণা কেন্দ্রের উদ্ভাবিত খরা সহিষ্ণু রবি-১ ও ভারতীয় জাতের পাটের চাষ বেশি করেছেন এখানকার কৃষকরা। বর্ষা মওসুমের শুরুতেই কয়েকদিন ভারি বৃষ্টি হওয়ায় এবার পাটের ফলন ভালো হয়েছে।
কুয়াদা বাজারের বিশিষ্ট পাটের আড়তদার বাবু শেখর কুমার ভদ্র বলেন, গেল বছর দুই হাজার টাকা থেকে শুরু করে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত পাটের দাম হয়েছে। শেষের দামটা ধরতে পারেননি কৃষক। তাদের ঘরে ওই সময় পাট ছিল না। তবে এখন ভালো পাট হলে ২৪শ ২৫শটাকা পর্যন্ত কিনছি।উঠতি মুখি তো তাই বাজার এখন ভালো।
খেদাপাড়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘গত বারের তুলনায় আমার ইউনিয়নে এবার অনেক বেশি পাট চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোগবালাই নেই বললেই চলে। পুরোদমে পাট কাটা শুরু হয়েছে। ভালো বর্ষা হওয়ায় পাট জাঁক দিতে ও কোনো সমস্যা হবে না।
মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, গতবার দাম ভালো পাওয়ায় এবার উপজেলায় পাটের চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। কৃষক দাম বেশি পাওয়ায় এই চাষে ঝুঁকছেনও বেশী। মওসুমের শেষের দিকে বৃষ্টিপাত বেশি হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে এবং ভালো দাম পাবে বলে আশা করি।’