৬ বছর পর আপন ঠিকানা খুঁজে পাওয়া শিশু সাঈদকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর

0
120

এম এম নুর আলম, আশাশুনি

আশাশুনির সাংবাদিকদের সহায়তায় ৬ বছর পর আপন ঠিকানা খুঁজে পাওয়া শিশু আবু সাঈদ ওরফে পটলকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে হারিয়ে যাওয়া আবু সাঈদ (১৪) কে বিভাগীয় এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আশাশুনি থেকে তার মা, নানী, মামা ও আত্মীয় স্বজনদের হাতে তাকে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরকালে আশাশুনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম, আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ গোলাম কবির, বিভাগীয় এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আশাশুনি এর এডি ফারুক হোসেন, আশাশুনি প্রেসকাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জিএম মুজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এসকে হাসান, সদস্য এম এম নুর আলম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। হস্তান্তর এর আগে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম ও অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ গোলাম কবিরসহ উপস্থিত সকলে আবু সাঈদ এর পরিবারের সাথে কথা বলেন। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান তাদের বাড়ি পৌছানোর গাড়ি ভাড়া বাবদ নগদ ৬ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

এছাড়াও আগামীতে আবু সাঈদ ও তার পরিবারের যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার ঘোষনা দেন। এসময় তিনি এ মহৎ কাজের জন্য আশাশুনির সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, আবু সাঈদের বয়স তখন মাত্র ৮ বছর। স্বামী পরিত্যাক্তা ছাবিনা খাতুন তার পিতার বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার দেলুয়ারকান্দি গ্রামে আশ্রয় নেয়। পিতার কাঁধে কতদিন বসে বসে খাবে এ চিন্তায় সে নিজের পায়ে দাঁড়াতে ঢাকায় পাড়ি জমায়। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকুরী পায়। শিশু পুত্র সাঈদ (৮) ও তার মা ভাড়া বাসয় থাকত। মা যখন কাজে শিশু সাঈদ তখন পথে-দোকানে ঘুরে বেড়াত। একদিন সে হারিয়ে যায়। পুত্র হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে মা আশপাশে খোঁজাখুজি ও কখন বাচ্চা ফিরে আসবে সে আশায় অশ্রু বিসর্জন দিতে থাকে। কিন্তু না আর ফিরে আসেনি।

এদিকে বিভিন্ন জায়গায় ঘাত প্রতিঘাত পার করে আবু সাঈদ ওরফে পটল এর ঠাঁই হয় সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনিতে অবস্থিত বিভাগীয় এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। বিষয়টি জানতে পেরে আশাশুনির কিছু সাংবাদিক আবু সাঈদের সাক্ষাৎকার ভিডিও ধারণ করেন।

এরপর সেই ভিডিও টি এসকে টিভি লাইভসহ বিভিন্ন ফেসবুকে শেয়ার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ভিডিও মালায়েশীয়া প্রবাসী দেলুয়াকান্দির জনৈক ব্যক্তি দেখে তার মনে হয় এই সাঈদ ছাবিনার ছেলে। তখন তারা আশাশুনির সাংবাদিকদের সাথে মোবাইলে কথা বলার পর সাংবাদিকরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে ভিডিও কলের মাধ্যমে সাঈদের সাথে তার মা, নানী, মামাসহ অন্যদের কথা বলিয়ে দেয়। আবু সাঈদ সবাইকে দেখে চিনে ফেলে এবং তার মা-নানী-মামা তাকে দেখে চিনতে পারে। এদিকে, হস্তান্তরের সময় ৬ বছর পর শিশু পুত্র আবু সাঈদ ও তার মা-নানী-মামাদের খুশিতে অশ্রু ঝরিয়েছেন উপস্থিত সকলেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here