মোকাদ্দেছুর রহমান রকি
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত সেবিকাদের মধ্যে বৈশি^ক করোনা উপলক্ষে প্রধান মন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত প্রনোদনা টাকা বন্টনে তালিকা তৈরীতে বৈষম্য সৃষ্টি হওয়ায় হায় হুতাশ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
গত বছরের মার্চ থেকে ছুটি বাতিলের পাশাপাশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেও প্রধান মন্ত্রী কর্তৃক করোনা উপলক্ষে ডিউটিতে উৎসাহ যোগানোর জন্য প্রনোদনা টাকা না পেয়ে সিংহভাগ সেবিকাদের মধ্যে বিরাজ করছে হায় হুতাশ ও ক্ষোভ।
অভিযোগ উঠেছে, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রনোদনা টাকা প্রাপ্তিদের যে ৯৪ জনের তালিকা ইতি পূর্বে প্রেরন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে সরাসরি করোনা রোগীদের ভর্তিকৃত ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করেননি। করোনা রোগী ভর্তি থাকা ওয়ার্ডে ডিউটি না করেও প্রনোদনার টাকা পাওয়ায় প্রেরিত তালিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে কর্তব্যরত সেবিকাদের সিংহভাগ। তাদের দাবি যদি করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন না করে প্রধান মন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত প্রনোদনার টাকা পান তা হলে তারা কেন বঞ্চিত হবেন?
হাসপাতালের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে, সম্প্রতি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত ৯৪জন সেবিকাদের মধ্যে প্রধান মন্ত্রী কর্তৃক প্রনোদনার টাকা বিতরন করা হয়েছে। তাদের মূল বেতনের দু’মাসের সমপরিমান অর্থ প্রদান করা হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত সেবিকাদের সিংহভাগই প্রনোদনার টাকা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় চরম ক্ষোভ ও হায় হুতাশ বিরাজ করছে। যাদের মধ্যে প্রনোদনার টাকা প্রদান করা হয়েছে তাদের অনেকে করোনা রোগীদের ওয়ার্ডে ডিউটি না করেও প্রনোদনার টাকা পেয়েছে।
সূত্রগুলো দাবি করেছেন, প্রধান কর্তৃক ঘোষিত প্রনোদনার টাকা পাওয়ার অধিকার হাসপাতালে কর্তব্যরত সেবিকা ও কর্মচারীদের যারা প্রতিনিয়ত রোগীদের সেবার দায়িত্ব পালন করেন। অথচ রোগীদের সেবার দায়িত্ব পালন করেও হাতে গোনা কয়েকজন প্রনোদনার টাকা পাওয়ায় অনেকের মধ্যে সৃষ্টি হয় নানা ক্ষোভ।
খোঁজ খবর নিয়ে জানাগেছে, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক হাসপাতালের বাইরে যে ক’টি করোনা রোগীদের ওয়ার্ড খোলা হয়। ওইসব করোনা রোগীদের চিকিৎসার কাজে যেসব সেবিকা ও কর্মচারী সরাসরি দায়িত্ব পালন করেছেন শুধু মাত্রই তাদের তালিকা প্রস্তুত করেন হাসপাতালের সাবেক তত্বাবধায়ক ডাঃ দিলীপ কুমার রায়ের নির্দেশে। সেবিকাদের নামের তালিকা প্রনয়নের দায়িত্ব পালন করেন সে চক্রটি তারা করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করেননি এমন সেবিকাদের নামের তালিকা প্রস্তুত করে উপসেবা তত্বাবধায়কের সুপারিশ দিয়ে সাবেক তত্বাবধায়কের মাধ্যমে ঢাকায় প্রেরণ করেছেন। যার ফলে করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন না করেও প্রনোদনার টাকা পাওয়ায় অন্যান্য সিংহভাগই সেবিকাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় নানা ক্ষোভ।
তারা অবিলম্বে বৈষম্য মূলক তালিকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে ভয়ে টু শব্দ করতে সাহস পাচ্ছেনা। হাসপাতালে সিংহভাগ সেবিকা যারা প্রনোদনা টাকা থেকে বঞ্চিত তারা অবিলম্বে যারা প্রনোদনার টাকা পেয়েছে তাদের করোনা ওয়ার্ডে ডিউটির ব্যাপারটি তদন্তর দাবি করেছেন।
তাছাড়া, তারাও প্রনোদনার টাকার জন্য প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা গত বছরের মার্চ মাস থেকে সরকারি ছুটি ভোগ না করে সেবা দিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যের সাথে সামিল হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা ওয়ার্ডে না হলেও রোগীদের সাথে প্রতিনিয়ত সেবা দিয়েছেন। তাই তারাও সরকারের প্রনোদনা টাকা পাওয়ার দাবিদার মনে করে মুল বেতনের দু’মাসের সমপরিমান টাকা প্রত্যাশী।
বিষষটির ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রধান মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।