জীবনের দামে জীবিকা কেনা মেয়েদের পাশে দাঁড়ালেন উপজেলা চেয়ারম্যান

0
117

নিজস্ব প্রতিবেদক

জীবনের দামে জীবিকা কেনা মেয়েরা করোনাকালে ভাল নেই। রানু পারভীন (ছদ্মনাম) যাদের একজন। যশোর মাড়োয়ারী মন্দির সংলগ্ন পতিতা পল্লীর বাসিন্দা তিনি। কঠোর লকডাউনে তার আয়ের সব পথ বন্ধ। ঘরে যা খাদ্য সামগ্রী ছিল তাও শেষের পথে। তাই চিন্তার অন্ত ছিল না তার। তার মতো শতাধিক মহিলার বর্তমানে খাবারের কোন সংস্থান নেই।

তবে সামাজিকভাবে সর্বস্ব হারানো এই অসহায় মেয়েদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল। রবিবার তাদের খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। এই সহায়তা পেয়ে বেজায় খুশি তারা।

ওই পল্লীর বাসিন্দা রানী খাতুন (ছদ্মনাম) জানান, করোনার কারণে তারা মহাবিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন। আয়ের সব পথ বন্ধ হয়ে যায়। তারা কাউকে নিজের বিপদের কথা বলতেও পারেন না। অনাহারে ঘরের মধ্যে অনেকেই বন্ধি জীবন পার করেন। তার নিজেরও দু’দিন ধরে খাদ্য সামগ্রী শেষ হয়ে গেছে। দিনে একবার শুকনো খাবার খেয়ে জীবন-যাপন করছেন তিনি। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলের খাদ্য সামগ্রী পেয়ে খুশিতে দু’চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যায় তার।

পান্না পারভীন (ছদ্মনাম) জানান, তাদের পেশা সকল পেশা থেকে ভিন্ন। করোনা ভাইরাসের মধ্যে অন্যান্য পেশাজীবী স্বাস্থবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় বজায় রেখে কাজ করতে পারেন। কিন্তু দেশের অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাদের কাজের কোন সুযোগ নেই। তাদের পল্লীর প্রায় শতাধিক মেয়ে বেকারত্বের শিকার হয়েছেন। তারা বাইরেও বের হতে পারেন না। স্বাভাবিক মানুষের মত সমাজের কেউ তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন না। এই প্রথম যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল নিত্য প্রয়োজনীয় চাল, ডাল, তেল, লবন আলু, সবজিসহ খাদ্য সামগ্রী দিলেন। এ রকম সহযোগিতা তাদের এর আগে কেউ করেননি। প্রয়োজনী সব কিছুই দেয়া হয়েছে।

শুধু রানু, পান্না ও রানী নয়, ওই পল্লীর ১২৫ জন মেয়েকে একই সহায়তা দেয়া হয়েছে। পতিতা পল্লীর সামনে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী ও সবজি বিতরণ করা হয়। যশোর সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল প্রধান অতিথি হিসেবে এসব বিতরণ করেন।

এছাড়া, রবিবার আনোয়ার হোসেন বিপুল শহরের দড়াটানায় ৬০ জন কর্মহীন হোটেল শ্রমিককে, চুড়ামনকাটি ইউনিয়নে ১৫০ পরিবারে খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন। আর প্রতিদিনের মতো শহরের ছয়টি ওয়ার্ডের ৭০০ পরিবারকে বিনামূল্যে সবজি ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১০০ জনকে রান্না করা খাবার দিয়েছেন তিনি। সবমিলে রবিবার এক হাজার ১২৫ পরিবারকে সহায়তা দেয়া হয়েছে।

এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন লেবুতলার ইউপি চেয়ারম্যান আলীমুজ্জামান মিলন, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবু মুসা মধু, জেলা যুবলীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মারুফ হোসেন বিপুল, ত্রাণ ও পূনবাসন বিষয়ক সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম শাপলা, সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক মাজহারুল ইসলাম মাজহার, যুগ্ম-আহবায়ক শহীদুজ্জামান শহীদ, যশোর জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক আবুল কাশেম, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কামাল হোসেন পলাশ, পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক রেযোয়ান হোসেন মিথুন, শহর যুবলীগের সদস্য সাহিদুল ইসলাম রিপন, শহর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আব্দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক তছিকুর রহমান রাসেল, ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি দাউদ হোসেন দফাদার, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিক, চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জেল হোসেন, সদর উপজেলা যুবলীগের সদস্য মেহেদী হাসান রুনু, সেলিম পারভেজ, চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মাহাবুব হাসান রানু, চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম, ইউপি সদস্য আব্দুস সবুর, ইউপি সদস্য সিরাজ উদ্দিন, ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন, ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান, ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান, ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন, চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তানভীর রকসি প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here