প্রদীপ বিশ্বাস, বাঘারপাড়া
বছর বছর হাটের খাজনা, তোলা বাড়লেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বাঘারপাড়ার ছাতিয়ানতলার হাটে। যশোর সদর ও বাঘারপাড়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ছাতিয়ানতলা নামক স্থানে ও বুড়ি ভৈরব নদীর তীরে গড়ে ওঠে শতাব্দীর প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী এ হাট।
এক সময় যশোর সদর, বাঘারপাড়া ও নড়াইল সদর উপজেলাবাসীর একমাত্র হাট ছিলো এ ঐতিহ্যবাহী হাটটি। ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগীজ বনিকরা জাহাজ ভিড়াত এ ছাতিয়ানতলা বাজার নৌ ঘাটে। পর্তুগীজসহ ইউরোপের বড় বড় ব্যবসায়িরা আসতেন এ এলাকায়। তখন থেকেই রয়েছে এ জনপদের সুনাম। কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে দেশের প্রাচীনতম এ হাটের সুনাম। হাটের দিকে তাকালে দেখা যায় হাটের দূরবস্থা। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। কাদা পানিতে একাকার। এর মধ্যে বেচাকেনা চলছে বাঘারপাড়ার ছাতিয়ানতলা হাটে।
গত রোববার সরেজমিনে ঐ হাটে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে। হাটের কয়েকজন ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি জানান, ধানসহ বিভিন্ন শাকসবজি গৃহস্থালি পণ্যের জন্য এ হাট প্রসিদ্ধ। সপ্তাহে দুই দিন রোববার ও বৃহস্পিতিবার এখানে হাট বসে। এ হাট থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়। কিন্তু হাট উন্নয়নের বিষয়ে কোন নজরই দিচ্ছেনা সরকার।
সরেজমিন দেখা গেছে, স্থায়ী অস্থায়ী মিলে হাজারের বেশী দোকান। বেশির ভাগ দোকানে নেই কোন ছাউনি। কাচা বাজার, মাছ বাজার, কাপুড়িয়া পট্রি, চাউল বিক্রয়ের ঘর অস্থায়ী বিক্রাতাদের বসার সুবিধা নেই বাজারে।
কাপুড়িয়া পট্টির পাশেই পান বিক্রয় করছিলেন জগবন্ধু তিনি বলেন, দুই হাট পান বিক্রয় করতে পারিনি। পানিতে ভরে যায় সামনের রাস্তা। ক্রেতা আসতে চাইনা কাঁদা পানির কারনে।
খুচরা কাপড় বিক্রতা আব্দুল মান্নান জানান, বৃষ্টি হলেই এ রাস্তায় পানি বেধে যায়। যার কারনে ক্রেতা আসে না। আমাদের কাপড় বিক্রয় করা দায় হয়ে পড়েছে।
মাছ বিক্রেতা অশোক সরকার, কুমারেশ সরকার বলেন, ২৫ বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে পানিতে ভিজে মাছ বিক্রয় করছি। আজও মাছ বিক্রয়ের সেড নির্মাণ হলো না। কবে হবে তাও জানিনা। তবে মাঝে মাঝে কারা এসে মাপ জোপ নিয়ে যায়।
ইজারাদার প্রতিনিধি আব্দুল মান্নান বলেন, মাছ বাজার কাপুড়িয়া পট্রির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পানি বেধে সমস্য হচ্ছে। এ কারনে বর্ষাকালে ক্রেতা বিক্রেতাদের অভিযোগের শেষ থাকেনা।
ছাতিয়ানতলা বাজার কমিটির সভাপতি ইলিয়াজ হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ বাজার উন্নয়ন একটা বরাদ্ধ পাই। সে বরাদ্ধ কোথায় যাই কে জানে ? এ কারণে বাজারে কোন উন্নয়ন হয়না।
দরাজহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন বাবলু জানান, ‘আমার আগে অনেক চেয়ারম্যান চইলে গেছে তারা হাট উন্নয়নে কাজ করিনি। এখন ঐসব করবে খিডা, টাকা পয়সা কই’।