আশাশুনি প্রতিনিধি
আশাশুনিতে সরকারিভাবে ব্যক্তি মালিকানায় ইজারা প্রদান করে রাজস্ব আদায়কৃত সম্পত্তি বিধি বহির্ভূতভাবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে দখলের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরজমিনে ঘুরে জানাগেছে, খোলপেটুয়া ও গলঘেসিয়া নদীর সংযোগস্থল ত্রিমোহনায় শ্যামনগর উপজেলার পাড়ের ঘোলা গ্রামের গা ঘেসে নদীর চরভরটি প্রায় ১৫ একর সম্পত্তি রয়েছে। যাহা আশাশুনি উপজেলার ভূমিহীনদের মধ্যে বন্টন বা ভোগ দখল করার কথা।
কালক্রমে সেটি না হয়ে পার্শ্ববর্তী শ্যামনগর উপজেলার ঘোলা গ্রামের লোকজন দিনের পর দিন ওই সম্পত্তি জবর দখল করে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাধ্যমে ইজারা গ্রহন করে, আবার কোন কোন সম্পত্তি ইজারা ছাড়াই ভোগ-দখল করে চলেছে। ফলে সরকারি বিধি মোতাবেক বঞ্চিত হচ্ছে গলঘেসিয়া নদীর উত্তর পাড়ের আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ও প্রতাপনগর ইউনিয়নের কোলা, হিজলীয়া গ্রামের ভূমিহীন পরিবার।
এদিকে, ঘোলা, হিজলীয়া ও কোলা খেয়াঘাটের ঘোলা পাড়ের চরভরাটি হিজলীয়া মৌজায় ৬১০ নং দাগে আনুমানিক ১৫ একর সম্পত্তি নদীর চরভরাটি সরকারি খাস জমি রয়েছে। ওই সম্পত্তি শ্যামনগর উপজেলার ঘোলা গ্রামের গা ঘেসে অবস্থান করায় ওই গ্রামের লোকজন একসনা ইজারা গ্রহন বা ইজারা ছাড়াই দখল করে ভোগ করছে। এর মধ্যে, ঘোলা খেয়াঘাট টু শ্যামনগর উপজেলা সাথে সরাসরি পিচের রাস্তা হওয়ায় রাস্তা সংলগ্ন সম্পত্তি এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
রাস্তা সংলগ্ন খেয়াঘাটের মূখে স্থানীয় শ্যামনগর উপজেলার ঘোলা গ্রামের মৃত. আফসার আলী গাজীর পুত্র জলিল গাজী মাটি ভরাট করে দীর্ঘদিন বালু বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
২০১৭ সাল থেকে প্রতাপনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাধ্যমে ইজারা গ্রহন করে ভোগ দখল করে চলেছে। ক’বছর আগে ওই ভরাটি জমি সংলগ্ন জায়গায় স্থানীয় দোকানদার, ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক, ঘের ব্যবসায়ী ও খেয়া মাঝিরা মিলে গোলপাতার ছাউনি বাঁশ-খুটিযুক্ত একটি নাজের ঘর তৈরী করে। পাশেই জামে মসজিদ থাকতেও চলতি পথের মুসল্লিদের কথা চিন্তা করে নামাজের ঘরটি পাকা করাও হয়েছে। এরই মধ্যে একটি মহল নামাজের ঘর সংলগ্ন জলিল গাজীর ভরাটকৃত বালির আড়ত বেদখল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে পড়েছে।
অহেতুক ওই মহলটি পূর্ব শত্রুতার বসবর্তি হয়ে নামাজের ঘরের নাম করে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সরকারি রাজস্ব প্রদানকারী জলিল গাজীর ভরাটকৃত বালির আড়ৎ দখল করার ষড়যন্ত্রে ইজারা গ্রহনের জন্য পঞ্জেগানা মসজিদ নামে আবেদন করেছে। উভয় পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ও সংর্ষের আশঙ্কায় উপজেলা ভূমি অফিস ও আশাশুনি থানা পুলিশ সরকারিভাবে ইজারা ছাড়াই উভয় পক্ষকে একত্রিত করে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে, জলিল গাজী জানান, আমি একজন মুসলিম পরিবারের সন্তান। মসজিদ হোক এটা আমিও চায়। প্রতি বছরের ন্যায় ইজারা গ্রহনের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু, একটি মহল হিংসার বসবর্তী হয়ে মসজিদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত দাবী করে আমাকে বেদখল বা বালির ব্যবসা ধংস করার জন্য কুৎসা রটনাসহ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
প্রতিপক্ষ কয়েকজন চা দোকানী ও ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক জানান, মসজিদের ওজুখানা ও মলত্যাগের স্থান তৈরীতে সমুদয় জায়গা প্রয়েজন। ইজারা গ্রহনের জন্য আবেদন করেছি। কর্তৃপক্ষ ইজারা প্রদান করলে কাজ শুরু হবে।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা জানান, সরজমিনে তদন্ত করে সরকারি বিধি মাতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত রয়েছে। এব্যাপারে ভূক্তভোগী বালির আড়ৎদার জলিল গাজী প্রশসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।