বেনাপোল প্রতিনিধি
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব থেকে বড় গরুর হাট যশোর এর শার্শা উপজেলার সাতামাইল। এই হাট থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পাইকাররাা গরু ক্রয় করে নিয়ে যায় রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এর প্রধান কারন এই হাটটি দখল করে থাকে ভারতীয় গরু। এছাড়া এই উপজেলায় ছোট বড় প্রায় ১৪ শত গরুর খামারী রয়েছে। তারাও এই হাটে কেনা বেচা করে। বিশেষ করে কোরাবানীর ঈদের বাজার এখানে জমে উঠে খুব ধুম ধামের মধ্যে দিয়ে। বড়বড় গরু, দেশী খাসী ছাগল সহ ভারতের রাজস্থানের বড় বড় ছাগল, দুম্বা, ভেড়া, মহিষের আগমন ঘটে এই হাটে। করোনা সংক্রামণ বৃদ্ধির কারনে হাটটি বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন।
সম্প্রতি করোনা সংক্রামণ দেশে আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এবং ওই হাটে স্বাস্থ্য বিধি না মেনে বেচা কেনা করায় প্রশাসনের দৃষ্টি গোচর হলে বন্ধ করে দেয় । শার্শা উপজেলায় করেনা সংক্রমনে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১০ জনের মতো মৃত্যু সংঘটিত হয়েছে। এবং সহ¯্রাধিক লোক এই সংক্রামনে আক্রান্ত হয়েছে। অনেক আবার জ্বর ঠান্ডা, কাশি, নিয়েও ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাটে এসব উপসর্গ লোকের আগমন ও ঘটছে। এক কথায় এখানে স্বাস্থ্য বিধির কোন বালাই ছিল না।
দেশের এই বৃহৎ হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করছে এখানকার খামার ব্যবসায়ীরা। এই হাটে কোরবানীর গরুর সরবরাহ খুব ভালো ছিল। এখানে দেশের দুর দুরান্ত থেকে ক্রেতারা এসে গরু কেনা বেচা করায় হাটটি জমে উঠেছিল । কিন্তু করোনা মহামারির কারনে শনিবার এর হাট থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় দেশের এই বৃহৎ পশু হাটটি। এতে খামারীরা হতাশা প্রকাশ করেছে।
বেনাপোলের পুটখালী গ্রামের গরু খামারি নাসির উদ্দিন বলেন সাতমাইল পশুর হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রামে এখন গরু সস্তা, নেওয়ার ল্কো নেই। বর্তামানে খামারে যে গরু আছে দুই একজন ব্যাপারি আসলেও তারা দাম বলছে গতবছরের তুলনায় অনেক কম। যে গরু গতবছর দেড় থেকে ২ লাখে বিক্রি হয়েছে । সেই মাপের গরুর দাম বলছে ১ থেকে এক লাখ ২০ হাজার পর্যন্ত। এতে গরু লালন পালন করার চালান উঠবে না। খামারীদের মাথায় হাত দিয়ে বসার উপক্রম হয়েছে। সে বলে আমার খামারে প্রায় ৩ শতাধিক গরু শতাধিক ছাগল ও দেড়শর মত ভেড়া রয়েছে।
নাভারন-সাতক্ষীরা মহাসড়রে উপর সাতমাইল নামক স্থানে হাট বসিয়ে মানুষ চলাচলে বিঘœ ও স্বাস্থ্য বিধি অনিয়ম হলেও প্রশাসনের নজরদারী ছিল কম। দেশে করোনা এই মহামারি সংক্রামণের মধ্যে সীমান্তবর্র্তী কয়েকটি জেলার গরুহাট বন্ধ করা হলেও স্বাস্থ্য বিধি শতভাগ মেনে চলবে এ শর্তে সাতমাইল হাট পরিচালনার অনুমতি বহাল রাখে প্রশাসন। কিন্তু হাটে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি কোন ভাবে স্বাস্থ্য বিধি রক্ষা সম্ভব হচ্ছিল না। এতে স্থানীয় মানুষ করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ১০ জনের মত মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে কয়েকটি গনমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে অবশেষে স্বাস্থ্য বিধি রক্ষা করতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এ পশু হাটটি আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সাতমাইল হাটের ইজারাদার খতিব ধাবক বলেন, এই হাট থেকে সরকার প্রতি বছর প্রায় ৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। হাটটি যদি না চলে তবে বড় অংকের লোকশান গুনবে স্থানীয় খামারীরা। তারা সারাবছর বিভিন্ন জাতের গরু লালন পালন করেন সন্তান ¯েœহে। কোরাবানীর বাজার না ধরতে পারলে মাথায় হাত উঠবে এসব খামারীদের।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলীফ রেজা সাতমাইল গবাদি পশুহাট বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সম্প্রতী চরম ভাবে সীমান্তে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় সাতমাইল পশুর হাট আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।