সত্যপাঠ রিপোর্ট
সারাদেশে ব্যাটারি চালিত রিকশা-ভ্যান চলাচলের উপর সরকারের অমানবিক, অবৈজ্ঞানিক ও উন্নয়নবিরোধী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট যশোর জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি প্রদান করেছে। রোববার (২৭ জুন) বেলা ১২ টায় বাম গণতান্ত্রিক জোট যশোর জেলা শাখার এক প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের মাধমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এই স্মারকলিপি প্রদান করে।
স্মারকলিপি গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক তামিজুল ইসলাম খান। জোটের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদানে উপস্থিত ছিলেন জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মাকর্সবাদী) যশোর জেলার সাধারণ সম্পাদক কমরেড জিল্লুর রহমান ভিটু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের নেতা কমরেড কামাল হাসান পলাশ, কমরেড পলাশ বিশ্বাস, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির জেলা নেতা কমরেড আমিনুর রহমান হিরু কমরেড আব্দূল জলিল, বাসদ (মাকর্সবাদী) নেতা কমরেড তুহিন হোসেন।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখ ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ করছি করোনা অতিমারির সময় মানুষ যখন জীবন জীবিকা নিয়ে দিশেহারা, অপ্রত্যাশিত সরকারি এক সিদ্ধান্তে ব্যাটারি চালিত রিকশা-ভ্যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যা অমানবিক, অবিবেচনা প্রসূত ও উন্নয়ন বিরোধী।
রিকশা ও ভ্যানের ব্যাটারি বৈধপথে দেশে আমদানি হচ্ছে, প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। সেই বৈধ জিনিস ক্রয় করে কেন চালানো যাবে না- আমাদের প্রশ্ন ? পৃথিবী সামনে যায় আমরা জানি। তাইতো, পালকি, গরুর গাড়ির পরিবর্তে বাইসাইকেল, পা-চালিত রিকশা এসেছিল। তেমনি মানুষের অগ্রযাত্রায় মোটরবাইক, ট্যাক্সি, বাস এসেছে। তেমনি অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক উপযোগিতা বিবেচনা- ব্যাটারি চালিত রিকশা-ভ্যানও এসেছে। এতে মানুষের যাতায়াত সহজ, আরামদায়ক ও দ্রুত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সুলভ হয়েছে।
ব্যাটারি চালিত রিকশা-ভ্যান চালকদের কর্মশক্তি বৃদ্ধি করেছে। বয়স্ক ও শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বলরাও কারো বোঝা না হয়ে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছিল। এই যানের জন্য প্রতিদিন অনেক শ্রমঘন্টা বেঁচে যাচ্ছিল।
বেকারত্বে হাত থেকে স্ব-উদ্যোগে কর্মসংস্থানসৃষ্ট ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ভ্যান বন্ধ করার সাথে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। তাদের পরিবারের সদস্যসহ প্রায় ২ কোটি মানুষের রুটি-রুজি বন্ধ হয়ে যাবে। এই শ্রমিকদের অনেকেই রুটি-রুজির প্রয়োজনে আবার অন্ধকার জগতে হারিয়ে যাবে। সমাজে অপরাধমূলক কাজ বৃদ্ধি পাবে।
ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ভ্যানের ব্রেক ও গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ত্রুটিমুক্ত করার জন্য যান বন্ধ না করে বুয়েট কর্তৃক দেওয়া প্রতিবেদন অনুসরণ করে ব্রেক ও গতি নিয়ন্ত্রণ করা হোক। যানজট নিরসনে রাস্তা নির্ধারণ করা হোক।