মঈন উদ্দিন, ফুলতলা
ফুলতলা উপজেলার রাষ্টায়ত্ব পাটকল ইস্টার্ণ জুট মিলস লিঃ এর শ্রমিককে পদোন্নতি প্রদান করে নিয়ম বর্হিভূতভাবে পুণঃরায় পদানবতি। শ্রম আদালতে মামলা (নং- ১৪৩/২০১১), বিজ্ঞ আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে প্রশ্নবিদ্ধ পাটকলের নিয়োগ ব্যবস্থা। ২০১৭ সালে অবসরে গেলেও পাওনা প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা না পেয়ে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।
মামলার বিবরনে জানা যায়, দামোদর গ্রামের ইজার আলী বিশ্বাসের পুত্র হাশেম আলী বিশ্বাস ২৮/০৮/১৯৭৮ ইং তারিখে ইস্টার্ণ জুট মিলস লিঃ এর তাঁত বিভাগের ক পালায় বড় তাঁতী হিসাবে স্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে ২৫/০২/২০১০ ইং তারিখে উক্ত বিভাগের রিলিভার মোজাম্মেল হকের অবসারান্তে জেষ্ঠতার ভিত্তিতে হাশেম আলী বিশ্বাসকে ৩০/০৩/২০১০ ইং তারিখে রিলিভার পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। হাশেম আলী ১৩ মাস যাবৎ তার দ্বায়িত্ব পালন করার পরে ০৩/০৫/২০১১ ইং তারিখে পত্র মারফত তাকে পদানবতি সাপেক্ষে পুণঃরায় বড় তাঁতী করা হয়।
এ ব্যাপারে ইস্টার্ণ জুট মিলস লিঃ কর্তৃপক্ষ আদালতে জানান, পূর্বের রিলিভার মোজাম্মেল হক ৫৭ বছর বয়সে স্বাভাবিক নিয়মে অবসর গ্রহণ করলেও বি.এল.এল ১৮/০৭ নং মামলার রায়ের আলোকে তিনি ৬০ বৎসর বয়স পর্যন্ত চাকুরীর সুযোগ পান। যার ধারাবাহিকতায় মোজাম্মেল হক পুণঃরায় তার স্ব-পদে ফিরে আসলে হাশেম আলী সেট আপের অতিরিক্ত হওয়ায় তাকে পদানবতি দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে উল্লেখিত পদে মোজাম্মেল হককে নিয়োগ না দিয়ে মিলের গ পালার শ্রমিক আ. গফফারকে বেআইনী ভাবে রিলিভার পদে পদোন্নতি প্রদান করে ইস্টার্ণ জুট মিলস লিঃ কর্তৃপক্ষ নিয়োগ ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।
বিজ্ঞ শ্রম আদালত, খুলনা সকল বিষয়াদি শ্রবণ করে হাশেম আলী বিশ্বাসকে পূর্ণ মজুরী ও আনুসঙ্গিক সকল সুযোগ সুবিধা সমেত রিলিভার পদে পূর্ণবহাল করার নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে ইস্টার্ণ জুট মিলস লিঃ কর্তৃপক্ষ মোকাম শ্রম আপীল ট্রাইবুনাল, ঢাকায় উল্লেখিত রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আপীল (৩০১/২০১২) করে। মোকাম শ্রম আপীল ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ বিচারপতি শামসুল হুদা আপীল খারিজ করে বিজ্ঞ শ্রম আদালত, খুলনার রায় বহাল রাখেন। উচ্চ আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি হলেও পূর্বের পদ ফেরৎ কিংবা অবসর সুবিধা কিছুই পাননি হাশেম আলী। গত ১০/০৬/২০১৭ ইং তারিখ কোন ধরনের আর্থিক সুযোগ সুবিধা ব্যতিরেকে অবসরে যান তিনি।
হাশেম আলী জানান, প্রভিডেন্ড ফান্ড, গ্রাচুইটি মিলিয়ে তার পাওনার পরিমাণ প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা। পাওনা চাইতে গেলে তাড়িয়ে দেন মিল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে ইস্টার্ণ জুট মিলস লিঃ এর উপ-মহাব্যবস্থাপক এর সাথে কথা বললে তিনি ভারপ্রাপ্ত লেবার অফিসার সুমন সরকারের সাথে কথা বলতে বলেন।
তিনি জানান, বিজেএমসি এর নির্দেশ মোতাবেক সর্বোচ্চ আদালতের রায় ব্যতিত উল্লেখিত শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব নয়। বর্তমান সরকার বিজেএমসি নিয়ন্ত্রিত জুট মিলের প্রায় শতভাগ শ্রমিকদের পাওনা টাকা মিটিয়ে দিলেও হাশেম আলী সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।