এম এম নুর আলম, আশাশুনি
আশাশুনিতে করোনা ভাইরাসের ২য় ঢেউয়ের ছোবলে রোগির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। করোনা উপসর্গ বা করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রায় প্রতিটি গ্রামে রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে।
এলাকার ডাক্তারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রতিদিন যে সব রোগি তাদের কাছে আসছে তার বেশীর ভাগই জ্বর-সর্দি-কাঁশি-গলা-গা-হাতপা ব্যথা নিয়ে আসছে। যাদেরকে নমুনা পরীক্ষার আওতায় আনা হচ্ছেনা বা তারা নিজেরাও সাধারণ জ্বর ভেবে টেস্ট করাচ্ছে না। গত বছর (১ম ঢেউয়ে) আশাশুনি উপজেলায় ৪১ জন করোনা পজেটিভ হয়েছিল। যার অধিকাংশই ভিন্ন জেলা থেকে আক্রান্ত হয়ে আশাশুনিতে এসেছিল।
এসময় মারা গিয়েছিল মাত্র ৩ জন। এ হিসেব আশাশুনি হাসপাতালে যথারীতি ছিল এবং তাদেরকে কঠোর ভাবে হোম কোয়ারিন্টিন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিন বা হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ২য় ঢেউয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও ভারত থেকে আগত রোগিদের আগমনের মধ্যদিয়ে আশাশুনিতে করোনা রোগির আবির্ভাব ঘটে। ২য় ধাপে আশাশুনিতে এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে (হাসপাতাল) ৫১ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে।
সর্বশেষ ৪ জুন ও ৫ জুন দু’দিনে ১৩ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে হাসপাতালে। এ পর্যন্ত সর্বমোট (১ম ও ২য় ধাপ) ৯২ জন করোনা পজেটিভ এসেছে। উপজেলা করোনা নমুনা সংগ্রহ টিমের প্রতিনিধিদল শনিবার শোভনালী ইউনিয়নের গোঁদাড়া গ্রাম ও বুধহাটা থেকে মোট ৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মোক্তারুজ্জামান স্বপন সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
সহযোগিতায় ছিলেন অফিস সহায়ক জাকির হোসেন। তবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বহু রোগি করোনা উপসর্গ নিয়ে ২/৫ দিন থেকে ১০/১৫ দিন করে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসাধীন আছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এসব রোগির নমুনা সংগ্রহের জন্য সরকারি ভাবে উদ্যোগ নেওয়া এবং তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা দরকার।
কেননা, তারা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা কোন রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেনা। অপরদিকে, দুঃখজনক হলেও সত্য ২য় ধাপে করোনা উপস্বর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারীদের ব্যাপারেও তেমন কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা। উপজেলার বাশারত হোসেন (৫৫), আঃ আলিম (৬০), সহকারী শিক্ষক আব্দুল মজিদ করোনা পজিটিভ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন।
এছাড়া উজ্জল চৌকিদারের মা পার্বতী রানা রাহা (৬০), বাক্কার (৪৫), আনোয়ার খাতুন করোনা উপসর্গ নিয়ে ইন্তেকাল করেন। এসব ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও করোনা প্রতিরোধ কমিটিকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল।