‘টিকটক হৃদয়’ মানবপাচার চক্রের সমন্বয়কারী, নেটওয়ার্ক দুবাই পর্যন্ত : সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ

0
237

সত্যপাঠ ডেস্ক

বাংলাদেশি তরুণীকে ভারতে কেরালায় বীভৎস কায়দায় অমানসিক যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে ‘টিকটক হৃদয় বাবু’ একটি আন্তর্জাতিক ‘মানব পাচারকারী’ চক্রের সমন্বয়কারী বলে জানিয়েছে পুলিশ। ভিডিও ভাইরাল এর ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ওই চক্রের সদস্য।

এই চক্রটির নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইসহ কয়েকটি দেশে বিস্তৃত। বিভিন্ন সময় এই চক্রের সদস্যরা বেশ কয়েকজন নারী পাচার করেছে বলে দাবি করছে পুলিশ।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিসি শহিদুল্লাহ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “হৃদয় বাবুসহ চক্রের সবার বয়স ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল ও ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কিছু অপরাধী মিলে এই সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রটি গড়ে তুলেছে। চক্রটির নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইসহ কয়েকটি দেশে বিস্তৃত। স্কুল কলেজ পড়ুয়া বখে যাওয়া তরুণী থেকে গৃহিনী পর্যন্ত সবাই এ চক্রের টার্গেট।”

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশ জানায়, ভাইরাল ভিডিওটির ঘটনায় জড়িত সব বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছে পুলিশ। টিকটক হৃদয়সহ কয়েকজন আন্তর্জাতিক পাচারকারীচক্রের সহায়তায় অবৈধভাবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত যাতায়াত করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, মূলত টিকটক ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে তরুণ-তরুণীরা একটি ফেইসবুক গ্রুপে যুক্ত হয়। গ্রুপটির মূল পৃষ্টপোষক মূলত আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রটি। এই গ্রুপের অ্যাডমিনের তত্ত্বাবধানে গত বছরের শেষের দিকে ঢাকার পার্শ্ববর্তী একটি জেলার একটি রিসোর্টে ৭০০/৮০০ জন তরুণ-তরুণী পুল পার্টিতে অংশ নেয়। ওই পার্টির অন্যতম সমন্বয়কারী ছিল রিফাতুল ইসলাম ওরফে টিকটক হৃদয় বাবু।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, “এই গ্রুপে সুনির্দিষ্ট কিছু সদস্য আছে, যারা গ্রুপের নারী সদস্যদের ভারতের বিভিন্ন মার্কেট, সুপার শপ, বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দিয়ে পাচার করে। এই চক্রের মূল আস্তানা ব্যাঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায়। মূলত যৌনবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যেই বিভিন্ন বয়সের মেয়েদেরকে ভারতে পাচার করা হয়। চক্রটি ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কিছু হোটেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। যে হোটেলগুলোতে চাহিদা মাফিক বিভিন্ন বয়সের মেয়েদেরকে পাঠানোর তথ্য পেয়েছে পুলিশ।”

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ৩-৪ যুবক ও একটি মেয়ে মিলে এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করছে। এই ভিডিও সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে রিফাজুল ইসলাম হৃদয় নামের এক নির্যাতনকারীকে শনাক্ত করে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ।

ওই ঘটনায় ভারতের বেঙ্গালুরু পুলিশ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে হৃদয়সহ দুজন পালানোর সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের পুলিশ। তারা সবাই বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here