আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সরকারের সমালোচক এক সাংবাদিককে আটকের জন্য ‘বিমান ছিনতাই’ করার অপরাধে বেলারুশের এয়ারলাইন্সগুলোকে ইউরোপের আকাশে নিষিদ্ধ করতে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
ব্রাসেলসে এক বৈঠকে ইইউ এয়ারলাইন্সগুলোকে বেলারুশের আকাশসীমা ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে ২৭ দেশের জোটটি। একই সঙ্গে বেলারুশের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইইউ।
বিবিসি জানিয়েছে, ইউরোপের বেশিরভাগ এয়ারলাইন্সগুলো ইতিমধ্যে বেলারুসের আকাশসীমা বাদ রেখেই নিজেদের রুট পুননির্ধারণ করে ফেলেছে।
এছাড়া বেলারুশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব এয়ারলাইন্স বেলাভিয়ার অপারেটিং পারমিট বাতিল করেছে যুক্তরাজ্য। ইইউ নেতারা সদস্য দেশগুলোকে একই পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে।
বিমানে বোমা আছে, এমন তথ্য দিয়ে গ্রিস থেকে লিথুয়ানিয়াগামী একটি বিমানকে রোববার জরুরি অবতরণে বাধ্য করে বেলারুশ। পরে বিমান থেকে নামিয়ে আনা হয় সাংবাদিক রোমান প্রোতোসেভিচকে।
বিষয়টিকে বিমান ছিনতাই ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে তুলনা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে মিনস্ক বিমানবন্দরে আটকের পর সোমবার প্রথমবারের মতো সাংবাদিক রোমান প্রোতাসেভিচের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে বেলারুশ কর্তৃপক্ষ। এতে ওই সাংবাদিক বলেছেন তার স্বাস্থ্য ভালো রয়েছে আর বেলারুশের কর্তৃপক্ষের আনা অভিযোগ স্বীকার করে নিতে দেখা গেছে। তবে দেশটির প্রধান বিরোধী দলীয় নেতাসহ অ্যাক্টিভিস্টরা ভিডিওটির সমালোচনা করেছেন আর বলেছেন, চাপের মুখে রোমান প্রোতাসেভিচকে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
গ্রিসের এথেন্স থেকে ছেড়ে আসা রায়ান এয়ারের ফাইটটির গন্তব্য ছিল লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াস।
ফাইটটি যখন গন্তব্য থেকে মাত্র শ’খানেক মাইল দূরে বেলারুশের আকাশসীমায়, তখনই বিপত্তি।
বেলারুশের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে জানানো হয় বোমা আছে বিমানে। নির্দেশ দেওয়া হয় গতিপথ পরিবর্তনের। বেলারুশের ‘মিগ-টুয়েন্টিনাইন’ ফাইটারের প্রহরায় মিনস্ক বিমানবন্দরে অবতরণ করে, ১৭১ যাত্রীবাহী বিমানটি।
ততক্ষণে স্পষ্ট হয়ে গেছে, বোমার ঝুঁকি কেবল অজুহাত, বিমানের গতিপথ পরিবর্তনের কারণ বিশেষ এক যাত্রী। অবতরণের পরই গ্রেফতার করা হয় প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো সরকারের কট্টর সমালোচক সাংবাদিক রোমান প্রোতোসেভিচকে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, যখন বলা হলো, মিনস্কে অবতরণ করবে বিমান। রোমান তখনই বুঝতে পারেন কী ঘটতে যাচ্ছে।