বাঘারপাড়া প্রতিনিধি
কি বিচিত্র এ দেশ! এমনই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্টজনেরা। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার এক মাস পার হলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর। গত ২৫ এপ্রিল বাঘারপাড়ায় সিটি ডায়গনস্টিক সেন্টারের অনিয়মের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহন না করায়, সেবা গ্রহিতারা সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বুক ফুলিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কার্যক্রম। থামছে না অনিয়ম প্রতারণা।
তবে সিভিল সার্জন যশোর জানিয়েছেন, ‘ব্যবস্থা নেওয়ার একতিয়ার আমার নয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি, তারাই ব্যবস্থা নেবেন’।
এ দিকে স্বাস্থ্য বিভাগের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা জানিয়েছেন, ‘আমি এ বিষয়ে যশোরের সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলছি। ব্যবস্থা যা নেওয়ার সিভিল সার্জনই নেবেন।’
এর আগে গত ৩১ মার্চ থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে অনিয়ম প্রতারনাসহ একাধিক অভিযোগ উল্লেখ করে দৈনিক বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক পত্রিকায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশ হয়। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য বিভাগ গড়িমসি করে যাচ্ছে। পরে ফের ফলোআপ নিউজে ‘অনিয়ম চলছেই’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর স্বাস্থ্য বিভাগের টনক নড়ে।
গত ১২ এপ্রিল তদন্তে আসেন সিভিল সার্জনের গঠিত টিম। তদন্ত কমিটির সভাপতি যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. সাইনূর সামাদ, সদস্য সচিব বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শরিফুল ইসলাম ও সদস্য সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ তদন্ত শেষে গত ২৫ এপ্রিল প্রতিবেদন জমা দেন। আর এই প্রতিবেদন জমার পরই ঝিমিয়ে পড়ে স্বাস্থ্য বিভাগ।
তদন্ত কমিটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে তদন্ত করা হয় সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। তদন্তে সত্যতাও মিলেছে। ব্যবস্থা যা নিবেন সিভিল সার্জন স্যারই নিবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিনিয়র এক ডাক্তার জানিয়েছেন, সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শেয়ারিং পার্টনার ডা. মীর আবু মাউদ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতা হওয়ায় ও যশোর সদর হাসপাতালের বড় পদে থাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে সমন্বয় করে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছে। যার কারণে অনিয়ম থাকলেও নড়েচড়ে বসছে না স্বাস্থ্য বিভাগ।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহিন জানিয়েছেন, ‘সিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনিয়ম প্রতারণার অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’