সত্যপাঠ রিপোর্ট
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের নিশর্ত মুক্তি ও নিপীড়নকারীদের শাস্তির দাবিতে যশোরে সাংবাদিকদের সাতটি সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। পরে ছয় দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বুধবার দুপুরে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টায় শহরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে সাংবাদিকেরা অবস্থান নেন। এ সময় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি একরাম-উদ-দ্দৌলা, প্রেসক্লাব যশোরের সম্পাদক আহসান কবীর, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারাজি আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ দিনু আহম্মেদ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুনীরুজ্জামান ও বাংলাদেশ টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের জিয়াউল হক।
সংহতি জানিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দেন প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির (মাকর্সবাদী) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আনোয়ারুল কবীর নান্টু, দৈনিক গ্রামের কাগজের সম্পাদক ও প্রকাশক মবিনুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় প্রথম আলোর জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে ৫ ঘন্টা আটকে রেখে নিপীড়নমূলক আচরণ করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ফাঁসিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত ‘চুরির অভিযোগ’ নিতান্তই হাস্যকর ও ষড়যন্ত্রমূলক। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের আমলাদের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করায় তার উপর এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের নিশর্ত মুক্তি ও নিপীড়নকারীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
অবস্থান কর্মসূচির পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। শ্লোগানে শ্লোগানে শহরের রাজপথ প্রকম্পিত হয়। মিছিলটি শহর ঘুরে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সাংবাদিকেরা অবস্থান নে। এ সময় সাংবাদিকদের প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের হাতে এ সংক্রান্ত স্মারকলিপি তুলে দেন।
ওই স্মারকলিপিতে ৬ দফা দাবি জানানো হয়ছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে,
১. সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে;
২. রোজিনার বিরুদ্ধে রুজু করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে;
৩. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযুক্ত অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে;
৪. স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে;
৫. ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ বাতিল করতে হবে;
৬. ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’-এর বিতর্কিত ধারাসমূহ বাতিল করতে হবে।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের হাতে স্মারকলিপি দেওয়ার সময় প্রেসক্লাব সম্পাদক আহসান কবীর সাংবাদিকদের দাবিগুলো তুলে ধরেন।
জেলা প্রশাসক জানান, তিনি স্মারকলিপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত পাঠিয়ে দেবেন।