‘প্রতিষেধক-বৈষম্য চলছে বিশ্ব জুড়েই’

0
151

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যা পরিস্থিতি, তাতে বিশ্ব জুড়ে ভ্যাকসিন বৈষম্য দেখা দেওয়ার আশঙ্কা আরও স্পষ্ট হচ্ছেÍ সোমবার প্যারিসে এক বৈঠকে দাঁড়িয়ে প্রথমে এ কথা বললেও মুহূর্তের মধ্যেই তা ফিরিয়ে নেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র মহাসচিব টেড্রস অ্যাডানাম গেব্রিয়েসাস। সংশোধন করে বলেন, ‘‘আশঙ্কা কেন বলছি, বিত্তশালী এবং মধ্য বা নিম্ন আয়ের দেশগুলির নাগরিকদের মধ্যে টিকাকরণের হার দেখে বলা যায় যে বিশ্বে এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন বৈষম্য চরমে।’’ দেশগুলির মধ্যে প্রতিষেধকও আনুষাঙ্গিক প্রযুক্তি ভাগ করে নেওয়ার অনীহাই এর জন্য দায়ী বলে দাবি করেছেন তিনি।
গেব্রিয়েসাস জানান, বিশ্বের জনসংখ্যার মধ্যে বিত্তশালী দেশগুলির নাগরিক মাত্র ১৫%। কিন্তু তাদের হাতেই রয়েছে প্রায় ৪৫% ভ্যাকসিন! তুলনায় মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশগুলির সম্মিলিত জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। তবে তাদের হাতে মোট প্রতিষেধকের মাত্র ১৭% পৌঁছেছে। যে কারণে বিত্তশালী দেশগুলির বেশির ভাগ ইতিমধ্যেই শিশু এবং কিশোরদের টিকাকরণ শুরু করলেও অন্য শ্রেণির একাংশের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত টিকা পাননি সামনের সারির করোনা যোদ্ধারাও।
তবে সম্প্রতি আগামী ছ’সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বের মধ্য এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলির সঙ্গে আট কোটি ভ্যাকসিন ভাগ করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিত্তশালী দেশ হিসেবে পরিচিত আমেরিকা। যে পরিমাণ এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এ দিকে আপাতত টিকা স্বত্ব না-চাপানো নিয়ে ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রস্তাবকে সোমবার সমর্থন জানিয়েছে চিন।
এখনও পর্যন্ত ব্রিটেনের মোট ৪৬টি প্রদেশে ভারতীয় স্ট্রেনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের নজরে এসেছে। সোমবার যে কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক ফের এক বার বাড়িতে থাকার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন দেশবাসীকে। এ দিন পর্যন্ত সে দেশে ভারতীয় স্ট্রেনে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩২৩। অন্য দিকে ভারতে প্রথম পাওয়া যাওয়া দু’টি স্ট্রেন, ‘বি.১.৬১৭’ এবং ‘বি.১.৬১৮’ বিরুদ্ধে ফাইজ়ার এবং মডার্নার তৈরি ভ্যাকসিন কার্যকর বলে সম্প্রতি দাবি করলেন এক দল আমেরিকার বিজ্ঞানী। তবে তাঁদের এই গবেষণা প্রাথমিক স্তরের বলেই জানা গিয়েছে।
এ বছর অলিম্পিক হওয়ার কথা জাপানে। তা বাতিলের দাবিতে সরব দেশবাসীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এখনও পর্যন্ত মাত্র ১% দেশবাসীর টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। এই অবস্থায় বাইরে থেকে আসা মানুষের ভিড় বাড়ুক তা তাঁরা চান না। তাইল্যান্ডে ইতিমধ্যেই আছড়ে পড়েছে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ। ৩ লক্ষ বন্দি এবং জেলকর্মীদের আগে টিকা দানের পরিকল্পনা চালাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
‘উন্নয়নশীল দেশগুলিতে বাড়তে থাকা সংক্রমণের বহরের’ মুখে একাধিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করে শক্ত হাতে করোনা মোকাবিলার জোরে কমপক্ষে ৩০ হাজার নাগরিকের প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে বলে মঙ্গলবার দাবি করলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। মরিসনের মন্তব্য, ‘‘অস্ট্রেলিয়ানদের জীবন নিয়ে কোনও ঝুঁকি আমি নিতে পারব না।’’
সোমবার আমেরিকার মোট ১৫টি প্রদেশ থেকে কোভিডে একটিও মৃত্যুর খবর মেলেনি বলে উঠে এসেছে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত তথ্যে। সে দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের ৬০ শতাংশের প্রতিষেধকের একটি ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here