এস.এম মুসতাইন, বসুন্দিয়া
দশদিন আগেও ছিল তিন”শ টাকা জনের মূল্য, ধান পাকতে পাকতে পাঁচ”শ টাকা হুংকার ছুড়ে দিলেও এখন মাঠ জুড়ে পাঁকা ধান দেখে ছয়-সাত”শ টাকায়ও মিলছে না একজন দিন মজুরকে হাক-মারছে ৮”শ তাও ৭ টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত, বিকাল বেলা ৬”শ। বসুন্দিয়া এলাকার মাঠে মাঠে ইরি-বোরো পাঁকা ধানের মৌ-মৌ সৌরভ ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে, কৃষান-কৃষানীর চোখে ঘুম নেই, যতোখন ঘরে ধান না উঠবে। ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস প্রতিদিনই জানাচ্ছে আবহাওয়াবিদরা তাতে চাষির মনে বড় ভয়, প্রতি বছরই এ-সময় দুর্যোগের কবল সহ নানা ধরনের ধানের রোগ ব্যধির সমস্যার সম্মূখীনে পড়তে হয়। সেই সাথে লোকসানের ঘানি টানতে টানতে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আবার থেমে থাকে না সর্ব কালের ¯্রষ্টে উৎপাদনকারি কৃষকগন।
চলতি বোরো মৌসুমে এলাকায় দিন মুজুরীর সংখ্যা দিন দিন কম হয়ে গেছে, গ্রাম্য খেটে খাওয়া মানুষ অনেক সৌখিনতা হয়ে বিভিন্ন মিল, কল-কারখায় চাকুরীতে যোগ দেয়ার ফলে কমে গেছে মাঠে কাজ করা লোকের সংখ্যা যারফলে সংকট দেখা দিয়েছে ধান কাটার জনের। প্রতিটি গ্রামে হাতে গোনা কয়েকজন-কে কাজ করতে দেখা গেলেও সুযোগ বুঝে বাড়িয়ে দেন মুজুরী। একটু বৃষ্টির ফোটা পড়তে দেখলে মহা খুশিতে হাজার থেকে ১২”শ টাকা হুংকার দিয়ে কদর বাড়িয়ে ফেলবে বলে আগে ভাগে পরিকল্পনা কাজের লোকজনদের। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কষ্টে দুঃখে ধার-দেনা করেও চাষিরা তার সোনার ফসল ঘরে তোলার শত-চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আবু জাকের, আব্দুর সামাদ, গিয়াস উদ্দিন সহ কয়েকজন দিন মজুরীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, সারা বছর তো আমরা দাম বাড়ায়-নে হয়তো মৌসুম বুঝে বড়-জোর এক মাস তারপর আবার সেই আগের মূল্য। বেশীর ভাগ সময় কাজ ছাড়া বসে থাকতে হয় সপ্তাহে দু-একদিন কাজ করতে হয় তাতে সংসার খরচ কোন রকম ভাবে চালাতে হয়। কথা হয় এলাকার কয়েকজন চাষির সাথে আব্দুর রাজ্জাক মোল্যা, নুর মোহাম্মদ মোল্যা, আব্দুর সালাম মোল্যা, আকরাম আলী সরদার, আমের আলী মোল্যা সহ আরো অনেকে জানান, ধানতো পেঁকে গেছে বসে থাকলে-তো হবে না টাকার দিকে তাকানোর সময় নেই, তাড়া তাড়ি কেটে ঘরে তুলতে হবে।
আবহাওয়া মোটামুটি অনুকুলে রয়েছে, এবছর যায়হোক বিছালী বানানো সম্ভব হচ্ছে তাতে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাসে লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
কথা হয় বাঘারপাড় উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা বাবু বিজন কুমার ও বাবু কল্লোল কুমার হালদার এর সাথে তারা জানান, আমাদের এলাকায় আবহাওয়া বেশ অনুকুলে আছে।
জামদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর প্রতিনিধি ইউনিয়ন সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, ইউনিয়ন বাসীদের পরিষদের পক্ষ থেকে কৃষকদের ক্ষেতের ধান কেটে ফেলার আহবান করা হচ্ছে সেই সাথে সকলকে ধান কাটতে সহযোগিতা করার জন্য প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন জেলাতে ঝড়, বৃষ্টি সহ শিলা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখীন চাষিরা সেই তুলনায় এখনও বৃষ্টি হয়নি। হাই-ব্রিড জাতীয় ধানের বাম্পার ফলন হবে এবছর, কৃষকদের দ্রুত পাঁকা ধান কেটে ফেলার জন্য সচেতন করা মুলক পরামর্শ সংরক্ষনের পদ্বতি জানানো হচ্ছে। চাষিরা বলেন নীচু জমিতে হাই-ব্রিড, উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের ফলন লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে উৎপাদন অনেক বেশী আশা করছেন।