বিশেষ প্রতিনিধি
যশোর শহরে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আজিজুল হক ওরফে সবুজ (৫০) নামে পুলিশের এক এসআই কে গ্রেফতার করা হয়েছে। জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করার পর পুলিশ বাড়িতে গিয়ে সবুজকে আটক করে। সে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেল ঘাটা উপজেলার সরুলিয়া গ্রামের বর্তমানে যশোরস দর উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামের আনোয়ারুল হক ও মাতা মোছাঃ নাসিমা খানমের ছেলে ও ঢাকা এপিবিএন থেকে সম্প্রতি খুলনা রেঞ্জে বদলী হয়েছেন।
রোববার ২৫ এপ্রিল ভোর রাতে যশোর শহরের বারান্দীপাড়ার হাফিজিয়া মাদ্রাসা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। তার সাবেক অর্থাৎ তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী বারান্দীপাড়া ঢাকা রোড হাফিজিয়া মাদ্রাসার পাশে বসবাসকারী তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী (৩৪) কোতয়ালি মডেল থানায় শনিবার ২৪ এপ্রিল রাতে দায়েরকৃত মামলায় বলেছেন, ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর আজিজুল হক সবুজের সাথে তার বিয়ে হয়। আজিজুলের আগেও তিনটি বিয়ে ছিল। বাদি চতুর্থ স্ত্রী। চাকরির সুবাদে আজিজ কর্মস্থলে থাকতেন। মাঝে মাঝে যশোরে বাদীর বাড়িতে আসতেন এবং তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করতেন।
মামলায় তিনি আরো বলেন, আজিজুল ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর সাতক্ষীরায় লাবনী নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন। এরপর ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আমাকে তালাক দেয়। গত ২৪ এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাত ১টায় আজিজুল হক সবুজ আমার ঘরের দরজায় নক করে। বাদি তাহজ্জত নামাজ পড়ছিল বলে মামলায় উল্লেখ করেন। দরজায় নক শুনে বাদি দরজা খোলামাত্র সে ঘরের ভেতর ঢুকেই ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। ওই সময় সে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। আজিজুল হক সবুজ বাথরুমে ঢোকার পর বাইরে থেকে ছিটকারী লাগিয়েছে বাদি জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে কল করলে কোতয়ালি থানা থেকে টহল পুলিশের এসআই শাহিনুর রহমান এসে বাদিকে উদ্ধার করে এবং আজিজুল হক ওরফে সবুজকে আটক করে।
কোতয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের এসআই আজিজুল হক সবুজ শারীরিক সম্পর্ক করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কোন নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক হলে সেটা আইনানুযায়ী ধর্ষণ বলে গণ্য হয়। ভোররাতে হটলাইন ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে আমরা দুইজনকে থানায় নিয়ে আসি। কিন্তু মামলার বাদি মামলা করতে রাজি ছিল না। তিনি আর্থিক সুবিধা নিয়ে আপস করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধর্ষণের অভিযোগ পুলিশ আপস করতে পারে না। সে কারণে মামলা রেকর্ড করতে হয়েছে। তবে স্থানীয়রা বলেছেন, ওই নারীর আগেও তিনবার বিয়ে হয়। একজন রড ব্যবসায়ীকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেও সুবিধাবাদী। এসআই এর কাছ থেকে সুবিধা আদায় করতে ব্যর্থ হয়ে মামলা করেছে বলে অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম মনে করেন। রোববার দুপুরে এসআই আজিজুল হক সবুজকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক আজিজুল হক সবুজের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।