এস.এম মুসতাইন, বসুন্দিয়া
গরীবের ঘরে জন্ম বাবা মা ভাই বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে সুকের আশায় পাড়ি জমায় সৌদি আরবে।
সাতটি বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে কোন সুফল না পেয়ে ২০০৮ সালে দেশে ফিরে আসেন, কি করবে ভেবে পাই না, বন্ধু আত্বীয় স্বজন সবাই মুখ ফিরিয়ে নেয়।
অবশেষে মামাদের সহায়তা কিছুটা পেয়ে মনে সাহস যুগিয়ে ২০১০ সালে মৎস চাষে ঝুকে পড়েন, তেমন টাকা পয়সা নেই ধার-দেনা ব্যাংকের লোন নিয়ে বারভাগ বিলে ডোবা জমি বন্দবস্ত চুক্তিতে আট বিঘা জমিতে ঘের কেটে মাছ চাষ সহ শাক শবজি পেঁপে কলা চাষাবাদ করে সুফলের ঠিকানা খুজে পেয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক।
দুই ছেলে এক মেয়ে স্ত্রী মা বাবা নিয়ে তার সংসার, সন্তানদের লেখা পড়া শিখিয়ে মানুষ করে গড়ে তোলার একমাত্র স্বপ্ন।
চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় সরকারি বীজ চায়না থেকে আমদানী কৃত “ইস্পাহানী -১” জাতের ধান পেয়ে দুই বিঘা জমিতে চাষ করে ভাল ফলনের পাওয়ার আশাবাদী যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক।
বাঘারপাড়া উপজেরার বারভাগ গ্রামের বিলে সাত-আটটি ঘের মালিকদের কাছ থেকে বছর চুক্তিতে মৎস চাষ করেন প্রায় ১০ বছর যাবত।
পাশাপাশি নানা ধরনের ফসল চাষ করেও বেশ চমক দেকিয়েছেন অন্য চাষিদের, শীতে আগে মাছ বিক্রি করার পর ঘেরের ভিতর বিনা চাষে সরিষা আবাদ করে সুফল সেই সাথে তাকলাগিয়ে দিয়েছে পার্শবর্তী ঘের মালিকদের।
আবার বোরো মৌসুমে উচ্চ ফলনশীল জাতের হাই-ব্রিড ধান চাষ তার প্রতি বছরের অভ্যাস ফলনও ভাল হয়।
এবছরও তিনি দশ বিঘা জমিতে বিভিন্ন হাই-ব্রিড জাতের ইরি-বোরো ধান চাষ করেছেন তার মধ্যে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহায়তায় বাঘারপাড়া উপজেলার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সরকারি ধান বীজ পেয়ে ছিলেন চার কেজি।
তা থেকে চারা উৎপাদন করে দুই বিঘা জমিতে আলাদা চাষ করেছেন।
অন্যান্য ধানের থেকে নতুন এ জাতে ধান গাছের গঠন আলাদা সার কীটনাশক কম লেগেছে রোগ বালাই তেমন নেই বর্তমানে শীষ বেরোনো শেষ হয়েছে।
নতুন এই ইস্পাহানী -১ হাই ব্রিড ধানের শীষের গঠন দেখে মনে করছেন অন্য দানের থেকে বেশী ফলন হবে।
সারা দেশে বোরো ধানের শীষ শুকানো সমস্যা দেখা দিলেও এই ধানের তেমন কোন লক্ষন দেখা যায়নি।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চাষিদের ধারনা আবহাওয়া অনকুলে থাকলে আশা করা যায় ভাল মানের উচ্চ ফলন হবে এ ধানের।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতি বছর আবহাওয়া জনিত কারনে অতিমাত্রার বৃষ্টির দুর্যোগের ফলে ধান কাটার সময় দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়।
যারফলে চাষির লোকসানের ঘানি টানতে হয় প্রতি বছর এ বছর এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকলে রয়েছে।
আর ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এ সমস্ত ধান কাটা পড়ে যাবে অতিমাত্রার বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ভাল মানের বিছালী তৈরি করাও সম্ভব হবে বলে আশবাদী।
নতুন এ জাতের ধান সর্ম্পকে বাঘারপাড়া উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা বাবু বিজন কুমার ও কল্লোল হালদার এর সাথে যোগাযোগ করলে বলেন, বাংলাদেশ সরকার চায়না থেকে আমদানী করে বিনা মূল্যে চাষিদের মাঝে দিয়ে ছিল।
ধানটি নতুন মোটা জাতের হাই-ব্রিড ইস্পানী -১ ভাল ফলন হবে।
তবে মাটির গুনাগুনের উপর এলাকা ভিত্তিক ফলন কমবেশী হতে পারে, নীচু ডোবা জমিতে চাষের উপযোগি বলে কৃষি কর্মকর্তা যানিয়ে ছিলেন।
ধানটির ফলনের বিষয় কর্তনের পর বোঝা যাবে, শীষের গঠনে আশাকরা যায় অন্য ধানের থেকে ভাল হবে এবং বারবাগ বিলে এই ধানটি অনেকেই চাষ করেছেন।
আগামী বছর বেশীর ভাগ চাষি ধানটি চাষ করতে আগ্রহ হবে বলে আশাবাদী।