মিজানুর রহমান, মণিরামপুর
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বিভিন্ন এলাকার বড় বড় অট্রালিকা, ব্রিজ, কার্লভাট, রাস্তা নির্মাণ, পুনঃ নির্মাণসহ অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করলেও যশোরের মণিরামপুুর উপজেলা তুলা উন্নয়ন ভবন ও গুদামটি সম্পূর্ণ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার যথেষ্ঠ কদর থাকা সত্ত্বেও মণিরামপুরে তুলা গুদামজাত করে রাখার তেমন কোন সু-ব্যবস্থা নেই। ফলে তুলা চাষে চাষিরা দিনদিন আগ্রহ হারাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, কমবেশি ৩৭ শতক জমির উপর মণিরামপুর উপজেলার তুলা উন্নয়ন ভবনটি ১৯৭৬-৭৭ সালে নির্মিত হয়। তখন এই ভবনের একটি অফিস ক, একটি গুদাম ও একটি ষ্টোর রুম করা হয়। আর পিছনের দিকের প্রাচীরের কাজ সমাপ্ত হলেও সামনে পাশে প্রাচীর না দিয়ে এবরো থেবরো ভাবে শুধুমাত্র একটি গেট লাগানো হয়। এমনকি অফিসের সামনে দুটি বড় গর্ত পড়ে আছে। গর্তগুলো মাটি ভরাট করলে সেখানে অফিসের সৌন্দার্য স্বরুপ তুলা, শাক-সবজী ও ফুলের বাগিচাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের বাগান করা সম্ভব হতো।
এছাড়া ভবনটির অফিস, গুদাম ও ষ্টোর রুমটির অধিকাংশ জায়গা ধ্বসে পড়েছে। ছাদের পলেস্থার এমনভাবে খসে খসে পড়েছে, যেখানে বৃষ্টি হলেই প্রায় প্রতিটি কে পানি পড়ে। ফলে পরিত্যক্ত এ ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে মারাত্বক আকারে ধারণ করেছে। বর্তমানে তুলা উন্নয়ন ভবনটি ব্যবহারে সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মকর্তারা কিছুদিন পূর্বে অফিস করলেও বর্তমানে একরুম বিশিষ্ট একটি টিনের ঘর তৈরি করে সেখানে অফিস করছে। কিন্তু তুলা গুদামজাত রাখা সম্পূর্ন বন্ধ রয়েছে।
উপজেলার আ¤্রঝুটা গ্রামের তুলা চাষি মিজানুর রহমান, লাউড়ি গ্রামের মিজানুর রহমান ও গৌরিপুরের আবদুল আজিজ বলেন, প্রতি বছর ২/৩ বিঘা জমিতে তুলা চাষ করে থাকি। তুলা উঠার সময় বাজার মূল্য কিছুটা কম থাকায় এ সময় তুলা বিক্রয় করলে লোকসানের ভাগই বেশি থাকে। যে কারণে তুলা গুদামজাত করে রাখা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। ৩ থেকে ৪ মাস গুদামে রেখে তুলাগুলি বাজারে বিক্রি করতে পারলে খরচ-খরচা বাদ দিয়ে যথেষ্ঠ লাভের অংশ পাওয়া য়ায়। কিন্তু তুলা গুদামজাত করে রাখার কোন ব্যবস্থা না থাকায় বছর দুয়েক তুলার আবাদ করা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছি।
মণিরামপুরে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কটন ইউনিট কর্মকর্তা আবু সাইদ বলেন, চলতি বছর মণিরামপুরে ৪’শ ৯০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১’শ ৬০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ কম হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি বছর যে পরিমাণে তুলা চাষ হয়, সে অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়নের জন্য অফিসে লোকবল নেই। যেখানে কমপে ৫/৬ জন ষ্টাফ থাকার দরকার, সেখানে আছি মাত্র ২ জন। তিনি আরও জানান, ভবনটি নির্মাণের পর থেকে অধ্যাবধি এ ভবনের কোন সংস্কার বা পুনঃ নির্মাণ না করায় বর্তমানে তুলা গুদামজাত করা একেবারই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান জানান, যতদ্রুত সম্ভব সম্পূর্ণ তুলা উন্নয়ন ভবনটি পুনঃ নির্মাণ করা এবং তুলা চাষে যাতে চাষিদের আগ্রহ বাড়ানো সম্ভব হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।