সত্যপাঠ ডেস্ক
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় আরও ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১ জনে দাঁড়িয়েছে। আগুনে প্রায় ৪০ হাজার বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এবং প্রায় ১৫৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বিকাল ৫ টার দিকে ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের কার্যালয়ের সভাক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মহসিন।
মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘ঘটনায় শুধু ঘরবাড়ি নয়, পুড়েছে আইওএম ও তুর্কি সরকারের দুইটি বড় হসপিটালও। ক্ষতিগ্রস্তদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালীতে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার বসতঘর পুড়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ফলে দৌড়াদৌড়ি ও হুড়োহুড়িতে পড়ে হাজারো রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। আগুনে দগ্ধ হয়ে দুই শিশুসহ ৭ জন রোহিঙ্গা মারা গেছেন বলে আজ সকালে জানান কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন। পরে বিকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মহসিন আরও ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানান।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারকে প্রধান করে ৭ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হরেছে বলে জানান চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন। আগুনে পুড়েযাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সোমবার সকালে পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
এদিকে আইএসসিজি এর কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ তাফহিম জানিয়েছেন, কুতুপালং বালুখালী ক্যাম্পভিত্তিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তৈরি একটি শিটের হিসাব অনুসারে বালুখালীর ক্যাম্প ৮-ইতে ঘরের সংখ্যা ৬ হাজার ২৫০, আর লোকসংখ্যা ২৯ হাজার ৪৭২ জন, ৮-ডব্লিউ ক্যাম্পে বাড়ি ৬ হাজার ৬১৩টি, আর লোকসংখ্যা ৩০ হাজার ৭৪৩ জন, ক্যাম্প ৯-এ বাড়ি ৭ হাজার ২০০টি, লোকসংখ্যা ৩২ হাজার ৯৬৩ জন এবং ক্যাম্প ১০-এ বাড়ি ৬ হাজার ৩২০টি, লোকসংখ্যা ২৯ হাজার ৭০৯ জন। তিনি উল্লেখ করেন অগ্নিকাণ্ডে এই চারটি ক্যাম্পের অধিকাংশ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দীর্ঘ ৭ ঘণ্টা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয়স্থল হারিয়ে এক কাপড়ে আশ্রয় নিয়েছেন কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে। আশ্রয়হারা লোকজন হারিয়েছেন তাদের ক্যাম্পের ঝুপড়ি ঘরের সব মালামাল। আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় গ্রামবাসীর বসতভিটায় আশ্রয় নিয়েছেন তারা।