সত্যপাঠ ডেস্ক
সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় জড়িত ও মদদদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এ জোটের নেতারা বলেছেন, হিন্দু পল্লিতে সাম্প্রদায়িক হামলায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সরকার কোনোভাবেই এই হামলার দায় এড়াতে পারে না। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জোটের বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন। শাল্লায় হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এই সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুরানা পল্টনে এসে শেষ হয়।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় নেতা জুলফিকার ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা বাচ্চু ভূঁইয়া, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা শামীম ইমাম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল আলী, সুনামগঞ্জের সিপিবি নেতা নিরঞ্জন দাশ খোকন প্রমুখ।
নেতারা বলেন, সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন বিষাক্ত ফণা তুলেছে। একের পর এক সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে। অথচ সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না। হামলা হতে পারে আঁচ করে শাল্লার গ্রামবাসী পুলিশকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তারা বলেন, রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ম্ফালনে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে হুমকির মুখে পড়েছে। এর আগে রামু, নাসিরনগরসহ বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার যত ঘটনা ঘটেছে, তার কোনোটির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হয়নি। এ কারণে শাল্লায় হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রক্ষা করছে বলেই এসব হামলার বিচার হচ্ছে না। সাম্প্রদায়িক হামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর রাষ্ট্রীয় আয়োজনে অতিথি করার সমালোচনা করে বাম নেতারা বলেন, উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আরএসএসের ভাবাদর্শ লালনকারী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর আসন্ন। হেফাজতসহ এ দেশের সাম্প্রদায়িক শক্তিকে তোষণ করে এবং ভারতের সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিস্ট শক্তির প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে সরকার বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় হেফাজত ও আরএসএসের মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির ঠাঁই হবে না। গণআন্দোলনের মাধ্যমে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি ও তাদের মদদদাতা সরকারের পতন ঘটানো হবে।