বিনোদন ডেস্ক
বর্ণবিদ্বেষ থেকে মুক্ত হতে পারলে যুক্তরাষ্ট্রের টিভি ও হলিউডের সিনেমা শিল্প প্রতি বছর এক হাজার কোটি ডলার বেশি আয় করতো। কিন্তু সাদা-কালো বিভাজনের কারণে এ আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে খাত দুটি। পরামর্শ সংস্থা ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানির একটি প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষ্ণাঙ্গদের নিয়ে সেখানে খুব কম কাজ করা হয়। আর করা হলেও তা ঠিক মতো তহবিল পায় না, পায় না প্রচার হওয়ার তেমন সুযোগ। তবে এমনও দেখা গেছে, ঠিক মতো পরিচর্যা পেলে সেগুলো অন্যান্য ছবির চেয়ে ভালো মূল্য তুলে আনতে পারে।
নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনটি করতে কয়েক হাজার চলচ্চিত্র এবং টিভি শো’র ওপর একাধিক গবেষণা প্রতিবেদনের সাহায্য নেয়া হয়েছে। সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে ৫০’র বেশি শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গ স্টুডিও এক্সিকিউটিউট, প্রযোজক, লেখক এবং পরিচালকের। ব্ল্যাকলাইট কালেক্টিভ নামের একটি সংগঠনের ৯০টি বিনোদন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে আলাপও করেছেন তারা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন ছায়াছবি নির্মাতা কৃষ্ণাঙ্গ লেখক, পরিচালক এবং প্রযোজকের সংখ্যা ৬ শতাংশের কম। এই কৃষ্ণাঙ্গ পেশাদাররাই কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিভাবানদের জন্য পথ তৈরি করে দেন। টিভিতেও একই রকম।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি দ্বারা নির্মিত পাঁচটি অনুষ্ঠানের চারটিতে বেশি প্রযোজক কৃষ্ণাঙ্গ। এদিকে পর্দায়ও একজন কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা যথাযথ গুরুত্ব পান না। ছবিগুলোতে কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতার সংখ্যা মাত্র ১১ শতাংশ। টেলিভিশনে অবশ্য সংখ্যাটা একটু বেশি। ২০১৯ সালে এর হার ছিল ১৪ শতাংশ।
কিন্তু একই বছরে মাত্র ১২ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা টেলিভিশনে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন। প্রচারের দিক দিয়েও খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার মতো নয়। ২০১৯ সালে মাত্র ৫ শতাংশ ছবি মুক্তি পেয়েছে। হলিউডে কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিভাবানরা উপযুক্ত পরিচর্যা পান না বলেও দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্থসামাজিক বৈষম্য ছাড়াও সিনেমা শিল্পে কৃষ্ণাঙ্গরা বর্ণবিদ্বেষের শিকার হন। ওই অবস্থার মোকাবেলা করে তাদের টিকে থাকার চেষ্টা করতে হয়। তাদের মতে, এ অবস্থার প্রতিকার করতে পারেন পর্দার অন্তরালে কাজ করা নির্বাহী কর্মকর্তারা। এর জন্য সংস্থাগুলো কৃষ্ণাঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের কার্যক্রম প্রসারিত করতে পারে।
প্রতিবেদনের উপসংহার টানা হয়েছে এভাবে, কালোদের সঠিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র শিল্পের ভেতরে-বাইরে রক্ত সঞ্চালন বাড়ানো যায়। আর তাতে সমস্ত মার্কিনি উপভোগ করবে তাদের জাতিগত সৃষ্টিশীলতার পরিপূর্ণ নির্যাস।