মহেশপুর ঝিনাইদহ \\ মহেশপুরে ভালাই বাবা থেকে ভালাই শা’র ইছালে ছোওয়াব ফালগুন মাসের শেষ বুধবার ১০ই মার্চ ভালাইপুর গ্রামের ভৈরব নদীর তীরে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ইছালে ছোওয়াব উপলক্ষে চলে মেলা, দরগা প্রান্তরে ওয়াজ মাহফিল ও সারাদিন ধরে আগত লোকজনের মধ্যে তাবারক বিতরন। ভালাইপুর গ্রামের বাড়ীতে বাড়ীতে চলে ঈদের আমেজ ও দাওয়াতী মেহমানদের আপ্যায়ন। ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত ইছালে ছোওয়াবটি কততম তা সঠিভাবে আয়োজক কমিটি জানাতে পারেনি। তবে বিভিন্ন ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৬৬০খ্রিষ্টব্দের দিকে শাহ আব্দুল্লাহ,শাহ হাতেম আলী ও শাহ কমর উদ্দিন নামে ৩ সহোদর বুজর্গ ইরাক থেকে এই উপমহাদেশে এসে এই এলাকায় আস্তানা গেঁড়েছিল ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে। বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের মতে ভৈরব নদীর পাড়ে সব থেকে উ”ু স্থান দেখে আস্তানা গাড়েন বর্তমান ভালাইপুর গ্রামে। ইছালে ছোওয়াবের দিন গ্রামের লোকজনের বাড়ী থেকে তাবারক এনে দরগা মসজিদ প্রাঙ্গণে জমা করে এবং সেই খাবার মসজিদের পাশে গাছের তলে সর্ব স্তরের মানুষের আপ্যায়ন করা হয়। রাতে দরগা প্রাঙ্গনে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক কমিটির সভাপতি ও তাদের বংশধর আবুল বাশার ওয়াজ মাহফিলে সভাপতিত্ব করবেন। জনশ্রুতি আছে, ৩ ভাই ইসলাম ধর্মের খুব ধার্মিক লোক ছিলেন এবং তারা ইসলাম ধর্ম প্রচার করতেন। তাদের কাছে এ অঞ্চলের অনেক হিন্দুরা মুসলিম ধর্ম গ্রহন করেন। শাহ আব্দুল্লাহর কাছে তদবির নিয়ে কুষ্ট রোগসহ অনেক কঠিন রোগ ভাল হয়ে যেতো সেই হিসাবে তিনি ভালাই বাবা খ্যাতি লাভ করেন। ভালাই বাবা থেকে ভালাই শাহ এবং কালক্রমে এখানে বসুতি গড়ে উঠলে ভালাইপুর নামে গ্রামের জন্ম হয়। তিন ভাইয়ের মধ্যে ছোট ভাই শাহ করিম আলী ভারতের চাগদা কাজীপাড়ায় মুসলিম পরিবারে বিবাহ করেন। তার ৪ ছেলে শাহা কালু, শাহা ইউসুফ, শাহা ইতু ও শাহা গোলাম রহমান। এর মধ্যে শাহা ইউসুফ আলী কোর-আন শরীফ হাতে লিখে বই তৈরী করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ইউসুফ আলীর ৩ ছেলে শাহা বকু, শাহা আবজাল ও শাহা গোলাম হোসেন। এর মধ্যে শাহ আবজালের পুত্র আব্দুল করিম এর পুত্র শাহ আবুল বাসার বর্তমানে দরগা কমিটির তদারকির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আব্দুল বাসার জানান, বর্তমান অশ্বত গাছের নিচে ৩ সহোদরের মাজার রয়েছে এবং রাস্তার পাশে মাজার দুটি তাদের সহোচরদের। তারা বাঙ্গালী ফরিদপুর থেকে এসেছিল। আবুল বাসার আরো জানান, তার চাচার এক পান্ডলিপি থেকে তিনি এ সকল তথ্য পেয়েছেন। বর্তমানে যশোর পাবলিক লাইব্রেরীতে সেটি সংরক্ষিত আছে। উক্ত বুজর্গ ব্যক্তিরা কখন কিভাবে মারা যায় তার কোন সুনির্দিষ্ট তারিখ পাওয়া যায়নি। অনেকেই বলেন, যে সকল আওলিয়াগন ইসলাম প্রচারের জন্য বঙ্গ দেশে এসেছিলেন এরাও তাদের মধ্যে অন্তর্ভক্ত এবং তাদের আগমনের সময় ছিল মোগল আমলে।